মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০২ পূর্বাহ্ন

অন্যের জমি মায়ের নামে জাল দলিল করে স্কুলে দানের অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৭ Time View

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাওনা জণকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে অন্য মানুষের জমি জাল দলিল করে নিজের মায়ের নামে দেখিয়ে স্কুলে দান করার অভিযোগ ওঠেছে।

এ বিষয়ে বর্তমান স্কুল কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন একই এলাকার মো. রবিউল আউয়াল নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চরকাওনা জণকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়টি পূর্বে একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। পরবর্তীতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিন অন্যের মালিকানা ভূক্ত তফসিলে বর্ণিত জমি তাদের মায়ের জমি দেখিয়ে প্রতারণা মূলকভাবে ১৯৯৬ সালের ১৩ আগস্টে ৪৩৭৯ নং রেজিস্ট্রীকৃত একটি মিথ্যা বানোয়াট দলিল বানিয়ে ৭৬ শতাংশ জমি জণকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে লিখে দেয়। যা প্রতারণা বা দুর্নীতির শামিল।

এমনকি, কোন কাগজমূলে সেই জমিতে প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের মাতার কখনো কোন স্বত্ব মালিকানা ছিল না এবং বর্তমানেও নাই। তারা সেই মিথ্যা বানোয়াট দলিল দেখিয়ে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ দানের অনুমতি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিও ভূক্তি গ্রহণ করেন।

আবদুল আউয়াল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তার ভাই রুহুল আমিন সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরী গ্রহণ করেন। অদ্যাবধি তারা উক্ত ৭৬ শতাংশ ভূমির মালিকানা গোপন রেখে শিক্ষকতা করে আসছেন। আজ পর্যন্ত বিদ্যালয় উক্ত ভূমির মালিকানা লাভ করেনি এবং দখল প্রাপ্তও হয়নি।

কর্তৃপক্ষের আদেশ থাকলেও আজ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক আর এস রেকর্ড মূলে বিদ্যায়লের নামে নামজারী করে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারের নি। প্রকৃত মালিক ও মালিকের ওয়ারিশগণ উক্ত ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তিগণের নিকট সাফ কাওলা দলিল মূলে বিক্রয় করে দিয়েছেন। তাতে প্রধান শিক্ষক কোন বাঁধা প্রদানও করেনি।

প্রধান শিক্ষক আব্দুল আউয়াল অবৈধ ভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষককে বাদ দিয়া তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করাবস্থায় অবৈধ ভাবে প্রধান শিক্ষক পদেও নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নত করতে পারেন নি এবং একজন ব্যর্থ শিক্ষক।

আব্দুল আউয়াল প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন শিক্ষক ও কর্মচারী পদে বিপুল অংকের টাকা ঘুষ নিয়া অবৈধ নিয়োগ দিয়েছেন এবং ঘুষের টাকা দিয়া পাকুন্দিয়া পৌর সভার মধ্যে জমি কিনেছেন ও তার ছেলের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছেন।

এছাড়াও প্রধান শিক্ষক এনটিআরসিএ নিবন্ধন সার্টিফিকেট জাল ও সৃজন করে বিপুল অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ করেন। প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল ২০২৫ সনের জানুয়ারি মাসে অবসর গ্রহণে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী রবিউল আউয়াল বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল আওয়াল ও সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন অন্যের মালিকানাভুক্ত জমি তাদের মায়ের জমি বলে দলিলে প্রকাশ করে মিথ্যা বানোয়াট ও জাল দলিল বানিয়ে স্কুলের নামে লিখে দিয়ে দুর্নীতি করেছে।

বর্তমানে ওই জমির মূল্য আনুমানিক ২ কোটি টাকার ওপরে। প্রধান শিক্ষক আবদুল আওয়াল বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়ে কারিগরি শাখার শিক্ষিকা নাজমা আক্তারসহ একাধিক জনের এনটিআরসিএ সার্টিফিকেট জাল করে অবৈধভাবে শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়ালের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে তাই এখন এ বিষয়ে কথা বলবেন না।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন লিখত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়ে সত্যাতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। স্কুলের জমি ছাড়াও আরো কয়েকটি বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে এগুলো তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty