নিজস্ব সংবাদদাতা : টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় দিনদিন বেড়েই চলেছে অপহরণের ঘটনা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার পরিবার থেকে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। এনিয়ে গত ১ বছরে টেকনাফে ১৪৫ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি অপহরণ হওয়া রোহিঙ্গাসহ ৯ জন কৃষক মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। গত সোমবার (৪ নভেম্বর) সকালে তারা ঘরে ফিরেছেন।
অপহরণের শিকার একাধিক ব্যক্তি জানান, টেকনাফে অপহরণের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। এখন লোকজন ঘর থেকে বের হতে ভয় পান। রাতের পাশাপাশি দিনের বেলায়ও ঘটছে অপহরণের ঘটনা। অপহরণে শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হয় গহীন পাহাড়ের জঙ্গলে।
সেখানে তাদের অত্যাচারের পর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা চাওয়া হয়। মুক্তিপণ পেলে ছেড়ে দেওয়া হয়, না পেলে অমানুষিক অত্যাচার করা হয়। স্থানীয় এবং রোহিঙ্গারা মিলে পাহাড়ে গড়ে তুলেছে অপহরণ চক্রের এক সিন্ডিকেট।
স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক আহমেদ জানান, টেকনাফে দিনদিন অপহরণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে স্থানীয়রা সবাই অপহরণ আতঙ্কে রয়েছেন। মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পান। প্রশাসনের শক্ত অবস্থান ও পাহাড়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলে অপহরণ কিছুটা কমতে পারে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী জানান, একাধিক অপহরণের ঘটনায় টেকনাফে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অপহরণকারী চক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা না গেলে অপহরণের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, অপহরণ রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অপহরণ চক্রের অনেক সদস্যকে আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এসব অপহরণ চক্রের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা। তাদের নেতৃত্বে পাহাড়ে অপহরণের ঘটনা ঘটছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভোক্তভোগীদের তথ্য বলছে, গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪৫ জন ব্যক্তি অপহরণের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ৮৮ জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৬ জন রোহিঙ্গা নাগরিক।
ভুক্তভোগী পরিবার ও জনপ্রতিনিধিদের দাবি, অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৭৮ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।