ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) অজিত দত্ত : সাধারণত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকেই হাওরে পানি কমতে থাকে এবং তা মার্চ মাস পর্যন্ত চলতে থাকে পানি কমার প্রবণতা। এ সময় হাওরের কৃষি জমি শুকিয়ে গেলে কৃষকেরা পুরোধামে তাদের রবিশস্য চাষ করে থাকেন। কিন্তু এ বছর হাওরের পানি কমার প্রবণতা আশানুরূপ না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিটামইন উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত হাওরে রয়েছে প্রায় ৯৩ হাজার কৃষকের ৮০ হাজার ৮শত ৪ হেক্টর জমি। যার উৎপাদিত ফসল বোরো ধানের পরিমাণ ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৭শ’ ৭৫ মেট্রিক টন, যা হাওরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অধিকাংশ জনগণের খাবারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
কিন্তু, হাওরে এখনও বর্ষার পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় পুরো হাওর জুড আটকে আছে বর্ষার পানি। যার কারণে পিছনে পড়ে গেছে রবিশস্য ভুট্টা, বাদাম, মাসকালাই, আলু, সবজির মত অসংখ্য জাতের শস্য। এই পানি অচিরেই নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হলে হাওরের কৃষকের ঘরে একমুঠো রবিশস্য ও ধান উৎপাদনের কোন ব্যবস্থা থাকবে না। বিপাকে পড়ে যাবে হাওরের সমস্ত কৃষক, খাদ্যের সংকটে ভোগবে জনগণ।
এ বিষয়ে উপজেলার অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিটামইনের কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তারা বলেন, এ বিষয় নিয়ে মহাসংকটে আছেন, কারণ বিগত দিনে হাওরে এ ধরনের সমস্যা কখনো হয়নি। তারা আরো জানান, হাওরের পানি নিষ্কাশনের কোন ধরনের সুযোগ না থাকায় হাওরে পানি জমে রয়েছে।
বর্ষায় পলি পরে খাল ও নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় হাওরের পানি নামায় বিঘ্ন ঘটেছে। যে কারণে অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইনের পূর্ব দিকে হাওরের এমন বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে সাধারণ কৃষক থেকে শুরু করে কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক চিন্তিত।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এই অবস্থা থেকে নিরসনের জন্য নদী খনন, খাল খননের বিকল্প নেই। অচিরেই হাওরে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাল খননের মাধ্যমে হাওরকে এবং হাওরের আবাদি কৃষি জমি রক্ষা করার জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে।