আছাদুজ্জামান খন্দকার, প্রতিনিধি, পাকুন্দিয়া : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আদালতের রায় উপেক্ষা করে প্রতিবেশীর জমি জবর দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে হাবিবুর রহমান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি উপজেলার চর পাকুন্দিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের আশঙ্কা।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৯২৮ ও ১৯৬৫ সালে উপজেলার চরপাকুন্দিয়া গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান গংয়ের পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে পাকুন্দিয়া মৌজার এসএ ৯৭ খতিয়ানের ১০৭নং দাগ থেকে ১০৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন একই গ্রামের সবজে আলী, বন্দে আলী ও মহিউদ্দীন। এরপর থেকে সবজে আলী গং জমিটি ভোগ দখল করে আসছেন। পরে এ জমির মালিকানা নিয়ে মৃত সবজে আলীর ছেলে এএসএম মিনহাজ উদ্দীন গংয়ের সঙ্গে হাবিবুর রহমান গংয়ের বিরোধ দেখা দেয়।
বিষয়টি নিয়ে ২০১৪ সালের এক ডিসেম্বর হাবিবুর রহমান গং বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে দুই পক্ষের শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারী আদালত মিনহাজ উদ্দীন গংয়ের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু আদালতের এ রায় উপেক্ষা করে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে গত ১১ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ওই জমি দখল করতে যান। সেখানে গিয়ে তারা ভুক্তভোগীরা যাতে জমিতে না আসে সেজন্য নানা ধরনের হুমকি ধমকি দেন।
ভুক্তভোগী এএসএম মিনহাজ উদ্দীন বলেন, হাবিবুর রহমান গংয়ের পূর্বপুরুষরা আমার বাপ-চাচার কাছে ১০৯ শতাংশ জমি সাফ কবলা দলিল মূলে বিক্রি করে গেছেন। ওই জমির নাম জারিও আমাদের নামে করা হয়েছে। খাজনাও হাল নাগাদ পরিশোধ করা আছে। তাদের দায়ের করা মামলাটিও আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। এরপরও বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জোর করে আমাদের জমিটি দখলে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে।
তারা জমিতে এসে আমাদের প্রাননাশের হুমকি ধমকি দিয়েছে। তারা বলেছে যদি আমরা ওই জমিতে আমাদের রোপন করা ধান কাটতে যাই তাহলে আমাদেরকে হত্যা করা হবে। ওরা আমাদের ওপর যেকোনো সময় হামলা করতে পারে।
মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এটি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। আমাদের পূর্ব পুরুষরা এ জমি তাদেরকে লিখে দেননি। তারা যে দলিল দেখাচ্ছে এগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া। আর মামলাটি খারিজের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছি।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের বিষয়টি থানার এখতিয়ার বহির্ভূত। তবে এ নিয়ে যদি কোনো রকম মারামারির ঘটনা ঘটে তাহলে যেকোনো পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।