মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৯ অপরাহ্ন

আধুনিক অলিম্পিক ইতিকথা- ৩য় পর্ব

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪
  • ৮৪ Time View

৭৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হয়ে টানা ১৩শ’ বছর চলা প্রাচীন অলিম্পিক একটা সময় চলে যায় হিমঘরে। দীর্ঘ বিরতির পর আবার আবির্ভূত হয় আধুনিক রূপে। অলিম্পিকের এই নব পথ পরিক্রমা নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজনে আজ থাকছে ৩য় পর্ব…

পূর্বে প্রকাশের পর
মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ : খ্রিস্ট-পূর্ব ৭৭৬ অব্দ থেকে ৩৯৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ সময়কালে প্রাচীন গ্রিসে দেবতাদের আবাসভূমি হিসেবে স্বীকৃত অলিম্পাস পর্বতের পাদদেশে গ্রিক দেবতাদের সম্মানার্থে যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো তাই অলিম্পিক গেমস নামে পরিচিত। প্রায় ১৫শ’ বছর প্রাচীন অলিম্পিক বন্ধ থাকার পর ১৮৯৬ সালে গ্রিসের এথেন্সেই পুনর্জন্ম ঘটে অলিম্পিক গেমসের। আর তাতে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখেন ব্যারন পিয়েরে ডি কুবেরত্যাঁ বা কুবারটিন।

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি : বিশ্ব জুড়ে নানা ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে তাদের নেয়া বিক্ষিপ্ত উদ্যোগগুলোকে সমন্বিত করে ব্যারন পিয়ের দ্য কুবেরত্যাঁ ১৮৯৪ সালের ২৩শে জুন প্রতিষ্ঠা করেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (International Olympic Committee) বা আইওসি। ব্যারন আশাবাদী ছিলেন যে, এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, যোগাযোগ এবং শান্তির সুমহান বাণী প্রতিষ্ঠিত হবে। এ প্রেক্ষাপটে প্রধান সংস্থা হিসেবে আইওসি বিভিন্ন দেশের স্থানীয় প্রশাসন এবং কর্তৃপক্ষের সাথে ক্রীড়ানুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারে আলোচনায় অগ্রসর হয়। এছাড়াও, সংস্থাটি কপিরাইট, ট্রেডমার্কসহ অন্যান্য বিষয়াদিও অলিম্পিক গেমসের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে সচেষ্ট হয়।

সিদ্ধান্ত হয়, অলিম্পিক লোগো, অলিম্পিক পতাকা, নীতিবাক্য, মতাদর্শ, সঙ্গীত সবই আইওসি’র স্বত্ত¡ হিসেবে থাকবে ও পরিচালিত হবে। তথ্য হিসেবে ধারণ বা রেকর্ড, সরাসরি সম্প্রচার, পুণঃপ্রচার এবং বিপণনও সংস্থার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অন্যান্য সংস্থা যদি আইওসি’কে সহযোগিতা করে তাহলে তারা অলিম্পিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছেন বলে ধরে নেয়া হবে। সভাপতি এই সংস্থার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি। পাশাপাশি সহযোগী সদস্যগণও নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

আইওসি’র সদর দফতর স্থাপিত হয় সুইজারল্যান্ডে। সিদ্ধান্ত হয় প্রতি চার বছর অন্তর অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হবে। আধুনিক অলিম্পিক গেমস আয়োজনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করে থাকে আইওসি। বতর্মানে এর সদস্য সংখ্যা হিসেবে রয়েছে বিশ্বের ২০৫টি দেশের জাতীয় অলিম্পিক কমিটি। তবে ২০১০ সাল থেকে কুয়েত জাতীয় অলিম্পিক কমিটির উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করায় তারা এখন সদস্য নয়।

আধুনিক অলিম্পিক গেমসকে দু’ভাগে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন অলিম্পিকে ভাগ করা হয়। তবে গ্রীষ্মকালীন গেমসকেই অলিম্পিক হিসেবে গণ্য করা হয়। আইওসি শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালী গেমসের পাশাপাশি যুব অলিম্পিক ও প্যারা অলিম্পিক গেমসেরও আয়োজন করে থাকে। ১৮৯৬ সালে গ্রিসের এথেন্সে প্রথম গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক এবং ১৯২৪ সালে ফ্রান্সের চ্যামোনিক্সে প্রথম শীতকালীন অলিম্পিক ক্রীড়া আসর বসেছিল। ২০১০ সালে সিঙ্গাপুরে প্রথম গ্রীষ্মকালীন যুব অলিম্পিক এবং ২০১২ সালে ইন্সব্রুকে প্রথম শীতকালীন যুব অলিম্পিক ক্রীড়া অনুষ্ঠিত হয়।

১৮৯৬ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একই বছরে গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯২ সালের ‘গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া উৎসব’ শেষে সিদ্ধান্ত হয় অলিম্পিক গেমসের দু’বছর পর শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হবে। সে মোতাবেক ১৯৯৪ সালে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সেই থেকে অলিম্পিক গেমসের দু’বছর পর শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। উদ্দেশ্য ছিল নাম বিভ্রাট, প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা, বছরের দূরত্ব এবং সর্বোপরি অর্থনৈতিক ঘাটতি মোকাবেলায় আইওসি’র সক্ষমতা অর্জন করা। (আগামীকাল পড়ুন ৪র্থ পর্ব)

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty