মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ অপরাহ্ন

আসামী গ্রেফতারের দাবি আইনজীবি সমন্বয়কারীদের বিক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২৯ Time View

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জে ৭ জনের বিরুদ্ধে দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের পর আইনজীবি সমন্বয়কারীরা আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের জোড়ালো দাবী জানান। গত বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সামনে জেলা আইনজীবি সমিতির সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে একাত্বতা পোষণ করা আইনজীবি সমন্বয়কারী বিএনপি নেতা এডভোকেট শওকত কবীর খোকনের তত্ত্বাবধানে আইনজীবি সমন্বয়কারীরা পুলিশ প্রশাসনের চিরুনী অভিযানে মামলার সকল আসামিদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতের আহবান জানান।

জানা যায়, গত সোমবার (১৯ আগস্ট) মামলাটি দায়ের করেন বিএনপি নেতা ও কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির বিজ্ঞআইনজীবি এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারী আইনজীবিদের প্রধান সমন্বয়কারী এ.এ.এম হিলালী। (মামলার স্বারক নং ১৪৫/২৪, তারিখ ১৯-০৮-২০২৪ইং) ধারা আইন শৃংখলা বিঘœকারী অপরাধ দ্রæত বিচার আইনের ৪ (১)/৫, দ্রæত বিচার আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট পার্থ ভদ্র মামলাটি সদর মডেল থানায় এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ প্রদান করেন।

মামলার আসামীরা হলেন শহরের নীলগঞ্জ রোড শোলাকিয়া এলাকার মৃত হাজী ছফির উদ্দিনের ছেলে ছিদ্দিকুর রহমান (৫৫) ও তার পুত্র সোহানুর রহমান (২৮), গাইটাল সাকিনের মৃত হাবিবের পুত্র অজয় রহমান (৩৫), একই সাকিনের হাবিবুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান (৩০), ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানার রাজুহাটি গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে শামীম রানা (৩৮) ও শহরের বত্রিশ এলাকার মৃত আঃ মান্নানের পুত্র এ.বি.এম আসাদুল্লাহ (৫৫)। এছাড়া মামলায় ৩০/৩৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ১৯ আগস্ট দুপুরে কিছু ব্যক্তি মামলার বাদীকে মোবাইল ফোনে জানায় যে, নেহাল গ্রীন পার্কে একটি অবৈধ বিবাহ বৌভাত অনুষ্ঠান হচ্ছে। তিনি প্রথম দিকে ঘটনাস্থলে যেতে না চাইলেও মোবাইলে একের পর এক কাকুতি মিনতির পর সামাজিক দায়বদ্ধতার খাতিরে বাদী সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান।
মামলার এজাহারে আরো জানা যায়, আসামি সোহানুর রহমান ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী গ্রামের আলগীর হোসেনের কন্যা মর্জিনা আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে পরবর্তীতে রেজিষ্ট্রি কাবিন মূলে বিয়ে করে। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই সোহানুর রহমান তার স্ত্রীর সাথে নানান তাল-বাহানা শুরু করে। অপারগ হয়ে স্ত্রী তার বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোদ আইনের ৩ ধারায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

আসামি মামলার খবর জানতে পেয়ে স্ত্রীকে অনেক বুঝিয়ে তার সাথে ঘর সংসার করার মিথ্যা আশ্বাস স্ত্রীকে দিয়ে মামলাটি আদালত থেকে প্রত্যাহার করিয়ে নেয়। কিন্ত সোহানুর রহমান মামলা প্রত্যাহার করার আগেই অর্থাৎ ১৪-০১-২০২৪ ইং তারিখে স্ত্রী মর্জিনাকে তালাক প্রদান করার বিষয় গোপন রেখে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তারা অবৈধ ভাবে ঘর সংসার করতে থাকে। একপর্যায়ে তালাক দেয়ার বিষয়টি স্ত্রী জানতে পারলেও আসামি তাকে এড়িয়ে চলতে থাকে।

সোহানুর রহমানের দ্বিতীয় বিয়ের খবর পেয়ে বৌভাত অনুষ্ঠানে গিয়ে হাজির হন মর্জিনা। উপস্থিত ব্যক্তিদের নিকট মানবিক সাহায্য চেয়ে তিনি সকল বিষয় খুলে বলেন। স্বামী (সোহানুর) দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে সালিস দরবারের মাধ্যমে বিষয়টি মিট মিমাংসার সিদ্ধান্ত হয়। দরবারে উপস্থিত লোকজন সর্বসম্মতিক্রমে স্ত্রীর দেনমোহর বাবত আড়াই লাখ টাকা ও ইদ্দতকালীন আনুষাঙ্গিক খরচ ৫০ হাজার টাকাসহ ৩ লক্ষ টাকা স্ত্রীকে প্রদান করবে ধার্য্য হয়। সকলের সামনে আসামি টাকা দিতে রাজি ও হয়।

সিদ্ধান্তের পর বিয়ে অনুষ্ঠানে মেহমানদের খাবার পরিবেশনের এক পর্যায়ে ১নং আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যান্য আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন পাশের হলরুম সংলগ্ন রুম থেকে মারাত্মক দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হলরুমে প্রবেশ করে অস্ত্র উচিয়ে মহড়া দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে। প্রাণ রক্ষার্থে উপস্থিত লোকজন ডাক চিৎকার করে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। আসামীরা ২নং সাক্ষী তাছলিমা’কে হেনস্থা ও শারিরীক ভাবে লাঞ্জিত করে।

এমন পরিস্থিতিতে বাদী আসামিদের সামনে দাড়িয়ে শান্ত থাকার ও আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে বারন করেন। এমন কথায় আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। হলরুমে উকিলসহ সবাইকে জিম্মি করে আটকে রাখার চেষ্টা করে। আসামীদের এহেন অপ্রতিকর কর্মকাÐে বাদী তাদের অনুয় বিনয় করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্ত আসামীরা তার উপর চড়াও হয়। বেদড়ক মারপিট করে তাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। সাথে থাকা নগদ টাকা পয়সা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। প্রায় ঘন্টাখানেক এমন পরিস্থিতি চলার এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের উদ্ধার করেন। আহতরা কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।

একজন আইনজীবিকেক জিম্মি করে হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে একাত্বতা পোষণকারী ১নং আইনজীবি সমন্বয়কারী বিএনপি নেতা এডভোকেট শওকত কবীর খোকন। তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রæত গ্রেফতার পূর্বক কঠোর ও দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট দিলরুবা খাতুন ও এডভোকেট শওকত কবীর খোকন।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty