প্রতিনিধি ,তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) : নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯ মে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোটের তারিখ যতো এগিয়ে আসছে ততোই জমে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থী এবং তাদের সমর্থক নেতাকর্মীদের সরব পদচারণায় এখন মুখর তাড়াইল উপজেলার হাট-বাজার, সড়ক, গ্রামসহ প্রত্যন্ত জনপদ।
তাড়াইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দু’জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। তারা হলেন- বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি মনোনীত জহিরুল ইসলাম শাহীন (লাঙ্গল) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাড়াইল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন লাকী (মোটরসাইকেল)।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন হলেন- নাজমুল হক আকন্দ (টিউবওয়েল), আবুল কাশেম খান (চশমা), শামরুজ জামান শামরুজ (মাইক), শাহ আলম সিদ্দীকি (তালা), গোলাপ মিয়া (উড়োজাহাজ), সাইফুল ইসলাম উজ্জল (টিয়াপাখি), দেলোয়ার হোসেন আলু (বৈদ্যুতিক বাল্ব)।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন হলেন- নার্গিস সুলতানা (সেলাই মেশিন), বিলকিস রহমান (কলস), খাদিজা আকতার আশা (হাঁস), অজুফা আকতার (বৈদ্যুতিক পাখা), খাদিজা আকতার লাকী (ফুটবল), আইতুন্নেছা (প্রজাপতি), হোসনে আরা (পদ্মফুল)।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার সবকটি এলাকা। বিরামহীন প্রচারণায় তৎপর রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা। কয়েকজন ভোটার জানালেন, প্রার্থীরা ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রতিদিন প্রার্থীদের ডাকে তাঁদের ঘুম ভাঙছে। তাঁরা প্রার্থীদের সামনে এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরছেন। নির্বাচিত হলে প্রার্থীরা এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন।
তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের সহিলাটী গ্রামের বাসিন্দা নুরুজ্জামান খান বলেন, ভোট এলে অনেকে ভোট চাইতে আসেন। ভোট চলে গেলে তাঁরা আমাদের কাছে আসেন না। তাঁদের কাছে গিয়ে সমস্যার কথা বলা সম্ভব হয় না। যে প্রার্থী আমাদের খোঁজ-খবর রাখবেন সে প্রার্থীকে আমরা নির্বাচিত করতে চাই।
স্বতন্ত্র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন লাকী গণসংযোগের সময় বলেন, আমার পক্ষে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করছি। ভোটাররা বলছেন, দলীয় মার্কা কোনো বিষয় না। ব্যক্তি হিসেবে যিনি জনগণের কাজ করবেন তারা তাকেই ভোট দিবেন। ভোটাররা আমাকে-ই বিজয়ী করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি আরও বলেন, ভোটারদের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি। বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
জাতীয় পার্টি মনোনীত ও জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম শাহীন (লাঙ্গল) বলেন, উপজেলার এমন কোনো গ্রাম নাই যেখানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) এর সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু’র উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে নাই। তাই জনগণ জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীকে-ই লাঙ্গল মার্কায় ভোট দেবে। আগামী ২৯ মে নির্বাচনে তাড়াইলের জনগণ আমাকে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখার সুযোগ দিবেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার সৈয়দা আশুরা আক্তার খাতুন বলেন, তাড়াইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৯’শ ৭৭ জন। তন্মধ্যে ৭৫ হাজার ৯শ’ ৬৩ জন পূরুষ ভোটার ও ৭১ হাজার ১২ জন মহিলা। ভোটার ৫৬টি ভোট কেন্দ্রে ৪শ’ ৩টি কক্ষে ভোট প্রদান করবেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯ মে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, তালজাঙ্গা, রাউতি, ধলা, জাওয়ার, দিগদাইড়, দামিহা ও তাড়াইল-সাচাইল এই সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে ১৯৮৩ সালে তাড়াইল উপজেলা ঘোষিত হয়।