স্টাফ রিপোর্টার, মিঠামইন :
সিলেটকে বন্যা থেকে রক্ষার প্রয়োজনে কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের বেশ কিছু অংশ ভেঙে ফেলার কথা জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
গত ২৩ নভেম্বর সকালে সিলেটে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি একথা বলেন। তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে হাওরবাসীর মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন চায়ের দোকান আর আড্ডায় এই বিষয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে অলওয়েদার সড়কে কথা হয় অটোরিকশা চালক সুলাইমান মিয়া, হাফিজুর রহমানসহ হাওরের লোকজনের সাথে। তারা জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওর অঞ্চল কিশোরগঞ্জ। কৃষি প্রধান এ জেলার মানুষ মূলত কৃষি, মাছ ধরা ও পশু-পাখি পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
বর্তমানে হাওরের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশেষ করে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে যুক্ত করে হাওরের মাঝখান দিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার অল-ওয়েদার সড়ক নির্মাণে বদলে গেছে হাওরের মানুষের ভাগ্য। এতে হাওরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি গতি এসেছে অর্থনীতিতেও।
ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব মিয়া জানান, আমরা সারাজীবন ধরেই দেখতেছি, সিলেটে যখন বন্যা হয় তখন আমাদের এলাকায় পানি থাকে না, আমরা তখন ধান কাটি। এখন কিছু মানুষ হিংসায় জ্বলে বলাবলি করে আমাদের হাওরের রাস্তার জন্য নাকি সিলেটে বন্যা হয়।
তাহলে রাস্তা হওয়ার আগে যে বন্যা হতো তখন কেন হতো? আমাদের রাস্তা অনেক উপকারে এসেছে, রাস্তা ভাঙ্গতে আসলে আমরা জীবন দিবো।
কিশোরগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, রাস্তাটি নির্মাণের পূর্বে যথাযথ রিসার্চের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তারপরও সরকার বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেটা ভালো মনে করবে সেরকমই ব্যবস্থা নিতে পারে।
৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটারের অল-ওয়েদার সড়কটি নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর হাওরের বিস্ময় কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।