স্টাফ রিপোর্টার : হেলাল গং তখন একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে জেল-হাজতে চলে যান। পরিবারে দু’একজন নারী সদস্য ছাড়া আর কেউ ছিলনা বাড়িতে। হেলাল গংদের পরিবারে চলছিল নিরব শোকের কান্না। ভয়, শংকা ও বাঁচার তাগিদের চিন্তা যখন হাটু গেরে বসেছিল মাথার উপর।
এমন পরিস্থিতিতে হেলাল গং হাজতে থাকাকালীন আদালতের একটি এক তরফা রায়ে তছ্নছ্ করে দেয় পরিবারটিকে। যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। আদালতের একতরফা রায়ে বেদখল হয়ে যায় হেলাল গংদের দখলে থাকা পৈত্রিক সম্পত্তি। পরিবারটিতে বেড়ে যায় মানসিক নির্যাতন, যা বর্ণনা করা খুবই দুরূহ ব্যাপার বটে।
জেল থেকে জামিনে বের হলেও কমেনি নির্যাতনের নোংরা পরিধি। প্রতিপক্ষ একের পর এক সাজানো মামলা দিয়ে অসহায় পরিবারটিকে নিঃস্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তবুও হেলাল গং বিচারের দ্বারে ঘুরছে, সত্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে। এ ব্যাপারে হেলাল গং সংশ্লিষ্ট আদালতের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
মামলা ও সরেজমিন সূত্রে জানা যায়, হোসেনপুর উপজেলার ধুলজুরী গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের পুত্র হেলাল গং ২০১০ সালে একটি মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। জেল-হাজতে থাকাবস্থায় জানতে পারেন একই গ্রামের মৃত মোঃ সামছউদ্দিন আহাম্মদ এর পুত্র বিএনপি নেতা মো: রফিকুল ইসলাম গং আদালতের একতরফা রায় পেয়ে হেলাল গংদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে নিয়ে গাছ-গাছালি, মাটি বিক্রি ও ফসলসহ বহু ক্ষতি সাধন করে। তবে আদালত থেকেই এমনভাবে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয় বলে তথ্যে উঠে এসেছে।
এমতাবস্থায় হেলাল গংদের পক্ষে ২০১২ সালের দিকে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে একতরফা ডিগ্রী পন্ড ও স্বত্ব স্বাব্যস্ত খাস দখল বাবদ দাবি সম্বলিত একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে হেলাল গংদের পক্ষের এডভোকেট জালাল আহমেদ গাউস বলেন, হেলাল গংরা জেলে থাকাকালীন একতরফা রায়টি হয়।
কিন্তু এটা হেলাল গংদের পৈত্রিক সম্পত্তি। তাদের পিতা মরহুম হাফিজ উদ্দিনের নামীয় আর ও আর, মাঠ রেকর্ড লিপিবদ্ধ আছে। সিএসেরও ধারাবাহিকতা রয়েছে। তাই ডিগ্রি পন্ড ও স্বত্ব স্বাব্যস্ত খাস দখলের দাবীয় মামলাটি চলমান রয়েছে।
এদিকে বিএনপি নেতা মো: রফিকুল ইসলাম একজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে বিরোধপূর্ণ জায়গা থেকে পাতালক‚পের ন্যায় গর্ত করে মাটি বিক্রি করছে। সংশ্লিষ্ট আইনজীবী গাউস এ বিষয়টিও আদালতের নজরে এনে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। যা আদালতে অপেক্ষমান রয়েছে বলে জানা যায়।
অপরদিকে যেভাবে মাটি পাতালসম গর্ত করে নিচ্ছে এতে করে মাটি ধসে যেকোন সময় পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তা ভেঙ্গে আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যেভাবে মাটি গর্ত করে বিক্রি করা হচ্ছে তা পরিবেশের বৈপরিত বলে মত দিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠনের এক সদস্য। পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করেই দেদারসে মাটি বিক্রি করে লক্ষ-লক্ষ টাকা ক্ষতি সাধন করছে।
এ ব্যাপারে হেলাল গং সংশ্লিষ্ট আদালতের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। এদিকে মামলার বিবাদী মো: রফিকুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পারায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।