স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়ার রামনগর গ্রামের আধ্যাত্বিক সাধক শাহ আলী দরবার শরীফ ভাঙার পায়তাঁরা করছে একটি কুচক্রীমহল। উদ্দেশ্য শাহ আলী দরবার শরীফের ওয়াকফ এস্টেটের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। দরবার শরীফের মোতাওয়াল্লী করিমগঞ্জ উপজেলার ঢালারপাড় গ্রামের মোঃ আলী আকবরের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি জানা যায়।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পরিবার্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সারাদেশে বেশ কয়েকটি মাজার ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। তাতে উৎসাহীত হয়ে করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়ার রামনগর গ্রামে স্থাপিত আধ্যাত্বিক সাধক শাহ আলী দরবার শরীফে চোখ পড়ে নুরুল ইসলাম গোলাপ মিয়ার।
করিমগঞ্জ থানা ও সেনাবাহিনী ক্যাম্পে দেয়া পৃথক লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, রামনগর গ্রামের মৃত ছাবেদ আলী মাস্তানের ছেলে নুরুল ইসলাম গোলাপ মিয়া তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে দরবার শরীফের সমূদয় সম্পত্তি গ্রাস করার বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। দরবার শরীফে হামলা ও ভাংচুর সহ ভক্তবৃন্দকে সে প্রকাশ্য ভয়-ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকী দিচ্ছে। নুরুল ইসলাম গোলাপ গং এর অভিপ্রায় হচ্ছে উস্কানি দিয়ে মাজারে হামলা চালিয়ে দরবার শরীফ উচ্ছেদ করা। দরবার ও ভক্তকুলের এমনি নিরাপত্তাহীনতায় মোতাওয়াল্লী মোঃ আলী আকবর করিমগঞ্জ থানা ও সেনাবাহিনী ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করেন।
দরবার শরীফের মোতাওয়াল্লী জানা, অনেক বছর আগে আধ্যাত্বিক সাধক তাপস মাস্তান শাহ আলী জীবন সংসার ত্যাগ করে নরসুন্দা নদীর তীরবর্তী এক নির্জন স্থানে ধ্যানে মগ্ন সময় কাটাতেন। পরবর্তীতে তিনি এখানেই বসবাস শুরু করেন। সে সময় তার কিছু অলৌকিক কার্যকলাপ পরিলক্ষিত হয়। আর এ কারনেই স্থানীয় লোকজন তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।
এরপর আস্তে আস্তে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন তার ভক্ত ও সাগরেদ হওয়ার জন্য আসতে থাকে। বিপুল সংখ্যক লোক তার বায়াত গ্রহণ করলে দরবার শরীফ সম্প্রসারণ করা হয়। তাপস মাস্তান শাহ আলী জীবদ্দশাতেই ২২৫ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে ২২ কাঠা জমি সাফ কাওলা হিসেবে ক্রয় করা হয়।
দরবার শরীফের অস্তিত্ব টিকে রাখতে তিনি পুরো সম্পত্তি সরকার বরাবরে ওয়াকফ এস্টেট করে দেন। ওয়াকফ করে দেওয়ার কিছু দিন পর তিনি মারা যান। তার অবর্তমানে বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসন যথারীতি উক্ত দরবার শরীফের সমূদয় সম্পত্তি দেখভাল করছে। ওয়াকফ প্রশাসনের আইন অনুযায়ী একজন মোতাওয়াল্লী হিসেবে দরবার শরীফের ভক্ত মোঃ আলী আকবরকে নিয়োগ করা হয়। তিনি সার্বিকভাবে তাপস মাস্তান শাহ আলী বাঙ্গালী ওয়াকফ এস্টেট যথাযথ ভাবে পরিচালনা করছেন।
দরবার শরীফে ইসলাম পরিপন্থী কোন কার্যকলাপ করা হয় না। দেশের অগনিত ভক্ত প্রতি বছর দরবার শরীফে একটি বাৎসরিক ওরস মাহফিল করে থাকেন। তবে ইদানিং দেশের পট পরির্তন হওয়ার পর নুরুল ইসলাম গোলাপের উস্কানীতে একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে নিয়ে উক্ত দরবার শরীফের সাকুল্য সম্পত্তি গ্রাস করার হীন অপচেষ্ঠায় ও অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাদের এমন কর্মকান্ডে মোতাওয়াল্লীসহ দরবার শরীফের ভক্তরা হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্টায় দৃঢ় ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই দরবার শরীফ রক্ষায় সেনাবাহিনীসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন দরবারের লোকজন।