প্রতিনিধি, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর : কটিয়াদীতে নতুন জাতের ধান রোপন করে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা। এ বিষয়ে কৃষকদের অভিযোগ ও কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে কৃষি বিভাগের। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের ৪ সদস্যের একট টিম কটিয়াদীতে সরেজমিন এসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জমি পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনে আসা কর্মকর্তাগণ হলেন- বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্লান্ট প্যাথলজি ডিভিশন প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার প্লান্ট প্যাথলজিস্ট ড. মোহাম্মদ হোসেন, সয়েল সাইন্টিফিক ডিভিশনের প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার সয়েল সাইনটিস্ট ড. মো. সাখাওয়াত হোসেন, প্লান্ট ব্রিডিং ডিভিশনের সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার প্লান্ট ব্রিডার ড. মো. আবু সাঈদ, প্লান্ট ফিজিওলজি ডিভিশনের সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার প্লান্ট ফিজিওলজিস্ট তুহিন হালদার।
কৃষকদের নতুন জাতের রোপন করা ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শনের পর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্লান্ট প্যাথলজি ডিভিশন প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার প্লান্ট প্যাথলজিস্ট ড. মোহাম্মদ হোসেন জানান, বীজ ধান সরবরাহকারী কোম্পানির বীজের গুণগত মান ভালো ছিল না। বীজ বাহিত রোগের সেপার বীজের ধানের চারা আগাম রোপণ করা হয়েছিল। রোপনের সময় জুলাইূের শেষ সপ্তাহ থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত।
সারের ডোজ সঠিক মাত্রায় না থাকায় বিরুপ আবহাওয়া জনিত কারণে রোগ বালাইয়ের সংক্রমণ বেশি ছিল। বালাই নাশক সঠিক ডোজ প্রয়োগ করা হয়নি। পটাশ সার কম মাত্রায় প্রয়োগ হতে পারে। এসব কারণে ধানের সমস্যা হয়ে বলে আমাদের ধারনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভুইয়া জানান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের ৪ সদস্যের একটি টিম সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন । ব্রি-১০৩ জাতের ধান বীজবাহী রোগের জন্য এই সমস্যা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বোরো মৌসুমে প্রণোদনা দেওয়া হবে। বীজ ধান সরবরাহকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লখ্য কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রি-১০৩ ধানের বীজ রোপণ করে কয়েক শতাদিক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বীজ রোপণের পর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধানের শীষ গজানোর ফলে ধানে চিটা ধরাসহ ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, রোপা আমান ধান রোপনের জন্য বীজ সংগ্রহ করার সময় কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নতুন জাতের ব্রি-১০৩ ধান রোপন করার পরামর্শ দেন। অল্প দিনে ও অন্যান্য ধানের চেয়ে ফলন বেশি হবে। তাদের পরামর্শে ইমরান সিডস্ ব্রি-১০৩ ধানের বীজ রোপন করে প্রতারিত হয়েছেন কয়েকশ’ কৃষক।
এসব এলাকার মাঠে রোপণ করা ধান গাছে সময়ের আগেই ধানের শীষ গজিয়েছে। এর ফলে আগেই পরিপক্ব হওয়ায় চিটে হয়ে মরে যাচ্ছে।
সেচ খরচ, কীটনাশক খরচ, জমিতে নিয়োগ করা শ্রমিক খরচ বাবদ প্রতি বিঘা ধানখেতে খরচ হয়েছে ১০-১২ হাজার টাকা। এতো টাকা খরচ করেও কাঙ্খিত ফলন না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় ভুগছেন কৃষকরা।