প্রতিনিধি, কটিয়াদী : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলতি মৌসুমে ভুট্রার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভুট্রার ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষক উৎপাদিত ভুট্রা চড়া দামে বিক্রি করে অপ্রত্যাশিত লাভ করছেন। গত বছর প্রতি মণ ভুট্রা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এ বছর তারা তা বিক্রি করছেন ১ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে। ভুট্রার বাম্পার ফলন ও দাম দ্বিগুণ পেয়ে কৃষকের মুখেও হাসি ফুটেছে।
কৃষকরা জানান, রবি মৌসুমে চিরাচরিত বোরো ধান চাষে লাভ কম, খাটনি বেশি। কিন্তু কম পরিশ্রমে, কম খরচে ও অল্প বিনিয়োগে ভুট্রা চাষে লাভ হচ্ছে কয়েকগুণ। ফলে ধারাবাহিকভাবে ভুট্রা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ২৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্রা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে জালালপুর, লোহাজুরী ও কটিয়াদী পৌরসভায় ভুট্টা চাষ বেশি হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভুট্রা মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তাদের ভুট্রা শুকাতে দেখে বাড়িতেই ফড়িয়ারা কিনতে আসছেন, কেনার জন্য দামও বলছেন।
কৃষকরা জানান, ভুট্রার সব কিছুই কাজে লাগে। ভুট্রা গাছের সবুজ পাতা সুষম গো-খাদ্য এবং শুকনো গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আগে যেসব জমিতে বোরো ধান চাষ হতো, এখন ওই সব জমিতে ভুট্রার আবাদ করছেন তারা।
উপজেলার বাগরাইট গ্রামের কৃষক আ: মান্নান বলেন, ৩ বিঘা জমিতে ভুট্রা চাষ করেছি। চাষ করতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। চাষ করতে যা খরচ হয়েছে তা জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত ভুট্রার মোচা ও গাছ থেকে উঠে আসবে। ফলন পেয়েছি ৯৫ মণ। আর উৎপাদিত ভুট্রা বর্তমান বাজার দরে লাখ টাকার উপরে বিক্রি হবে। যার সবটাই লাভ। ভুট্রা চাষ করে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর উপজেলায় ভুট্রার বাম্পার ফলন ও আশানুরূপ দাম পাওয়ায় কৃষকেরা খুশি। প্রচলিত পদ্ধতিতে ভুট্রা মাড়াই করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। কৃষি বিভাগ কর্তৃক ভুট্রা মাড়াই যন্ত্র বিতরণের ফলে কাজটি সহজ হয়েছে। ফলে কৃষকেরা বেশি আগ্রহী হবে ভুট্রা চাষে।