বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪০ অপরাহ্ন

কটিয়াদীতে মাদক কারবারি ধরার অভিযানেপুলিশের মারধরে সিএনজি চালকের মৃত্যুর অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩ Time View

স্টাফ রিপোর্টার, ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর : কটিয়াদীতে মাদক ব্যবসায়ী লিটন মিয়ার বাড়িতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে একটি মাদকের বড় চালান নিয়ে আসার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালানোর সময় ইয়াসিন মিয়া (৪০) নামে এক সিএনজি চালকের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতের স্বজনদের দাবি পুলিশের মারধরে ইয়াসিন মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের দাবি, এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে অভিযানের সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়ে ইয়াসিন মারা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার রাতে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চরঝাকালিয়া গ্রামে।
নিহত ইয়াসিন মিয়ার বাড়ি নরসিংদী জেলা সদরের চিনিশপুর ইউনিয়নের বিরপুর গ্রামের মৃত সাঈদ মিয়ার ছেলে। তিনি কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীসহ বসবাস করতেন।
ইয়াসিনের পরিবারের লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইয়াসিন মিয়া ৭ বছর ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ফেকামারা গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। সোমবার সন্ধ্যার পর চরঝাকালিয়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী লিটন মিয়া নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশ আসা টের পেয়ে সবাই দৌড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু ওই বাড়িতে থাকা ইয়াছিন মিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। পরে সেখানেই ইয়াসিনকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে পুলিশ। এতে ইয়াসিন অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী আমেনা খাতুন জানান, হাসপাতাল থেকে একজন পরিচিত লোক ফোন করে জানায় আমার স্বামীর লাশ পরে আছে হাসপাতালে। অন্যান্য স্বজনদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসি।
পরে খবর নিয়ে জানতে পারি আমার স্বামী পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর নিজেকে সিএনজি চালক হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু পুলিশ কোনো কথা না শুনে তাকে মারধর শুরু করে। পুলিশের মারধরে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু পর হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। আমি এর বিচার চাই।
সোমবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহত ইয়াছিনের মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোসেনপুর সার্কেল) মো. তোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাঈদুল ইসলাম, ওসি তরিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান ও নিহতের স্বজনরা।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তরিকুল ইসলাম। ওসি জানান, চরঝাকালিয়া গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী লিটন মিয়ার বাড়িতে এসআই কামালের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল অভিযান চালায়। দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- এএসআই নাহিদ, এএসআই মস্তুফা ও কনস্টেবল আশরাফুলইসলাম। গোপন সংবাদ ছিল, মাদক ব্যবসায়ী লিটন মাদকের একটি বড় চালান এনেছেন। পুলিশের টিম লিটনের বাড়িতে পৌঁছালে বাড়িতে থাকা সবাই দৌড়ে পালিয়ে গেলেও ঐ বাড়িতে থাকা সিএনজি চালক ইয়াসিন মিয়া দৌড়াতে গিয়ে মাটিতে পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। দ্রæত তাকে কটিয়াদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে একজন ম্যাজিস্ট্র্যাটের সামনে মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার পর ময়নাতন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাঈদুল ইসলাম জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার সময় ইয়াছিনের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে সে স্ট্রোক করে মারা গেছে নাকি নির্যাতনে মারা গেছে।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty