প্রতিনিধি, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) মিয়া মোহাম্মদ ছিদ্দিক : কারো পরনে পায়জামা-পাঞ্জাবী, কারো পরনে লুঙ্গি-গেঞ্জি, মাথায় মাটির ঝুপড়ি নিয়ে স্বেচ্ছায় নেমেছেন কাজে। সবার গায়ে-ই কাদামাটির চিহ্ন, মাথায় ঘাম। মাদ্রাসার ছাত্ররাও বসে নেই। কেউ ঠেলাগাড়ি দিয়ে মাটি টানছে, কেউবা ভাঙ্গা রাস্তায় মাটি ফেলছে।
প্রত্যেকেই আনন্দের সাথে স্বেচ্ছা শ্রমে সংস্কার করছেন ভাঙা রাস্তা। তাদের এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এলাকাবাসীও। মাটি টানার উপকরণ, কোদাল, ঝুপড়ি, বাঁশ ইত্যাদী দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
এ চিত্র কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের তাতারকান্দা ৩নং ওয়ার্ডের খানাখন্দে ভরা রাস্তা সংস্কারের। শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর এলাকাবাসীর স্বেচ্ছা শ্রমে সম্পন্ন হচ্ছে এ কাজ।
গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধশত মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে ইউনিয়নের শিমুল কান্দি মেইন রোড থেকে মসূয়া বাজারের যাওয়ার বাইপাসের রাস্তাটির বিভিন্ন অংশ মেরামতের কাজ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি অনেকটাই অকেজো ছিলো। বিভিন্ন স্থানে মাটি সরে গিয়ে চলাচলের সমস্যা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় কৃষকরা তাদের সবজি নিয়ে বিক্রি করতেও সমস্যার মধ্যে পড়ে। স্থানীয়রা আবেদন নিবেদন করেও বরাদ্দ না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাস্তা মেরামতের কাজ করা হয়নি।
দিনকে দিন সমস্যাগুলো প্রকট হতে শুরু করলে এটি স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামতের উদ্যোগী হন মসূয়া ইমাম ওলামা পরিষদের সভাপতি ও স্থানীয় কওমী মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি মো. ইসমাইল। তিনি স্থানীয় এলাকাবাসীকে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ও ব্যক্তি সহযোগিতায় স্থানীয় আলেম ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যুক্ত করেন রাস্তা সংস্কারে।
উদ্যোক্তা মুফতি মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি অনেকটাই বিচ্ছিন্ন ছিলো। ফলে মানুষ চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হয়। সরকার পরিবর্তন হওয়ায় দীর্ঘ সময় মেরামতের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হতে পারে এ শঙ্কা থেকেই আমরা উদ্যোগী হয়ে মেরামতের কাজে হাত দিলাম। ২-৩ কিলোমিটারের মধ্যে কিছু গর্ত ভরাট করা হয়েছে।
এসময় স্বেচ্ছাসেবী কাজে আরো সহযোগিতা করেন, সাবেক মেম্বার সারোয়ার জাহান বাচ্ছু, ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিক, জামাতে ইসলামীর ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা আমিনুল হক, সেক্রেটারি আবু বকর সিদ্দিক, উজ্জ্বল খা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- শামিম খান, হাদিউল ইসলাম, জোনায়েদ সাকিব, শজিব, আব্দুর রহিম, সাহাব উদ্দিন, জাকির হোসেন, শাহিন আহম্মেদ প্রমুখ।