মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন

কটিয়াদীতে সবুজের চাদরে ভরে ওঠেছে আমনের মাঠ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৯ Time View

প্রতিনিধি কটিয়াদী, এম এ কুদ্দুছ : ধান খেতের কথা ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ। ঝিরঝির বাতাসে সবুজের ঢেউ খেলানো সে দৃশ্যে মুগ্ধ হন সবাই। কৃষকের আগামীর সোনালী স্বপ্ন লুকিয়ে আছে সবুজ ধান খেতের মাঝে।

চারিদিকে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। শরতের রোদ-বৃষ্টির খেলায় সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। ফসলের মাঠের কোথাও ফাঁকা নেই, যতদূর দৃষ্টি পড়ে সবুজ আর সবুজ, নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলা, যেন সবুজের গাঢ় রঙে একাকার হয়ে পড়েছে।

কটিয়াদীতে মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে আমন ধানের সবুজপাতা, আর আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সবুজ ঘেরা রোপা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক। নতুন সাজে সেজেছে বাংলার প্রকৃতি।

এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন লাগাতে কৃষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আষাঢ় মাসের মাঝামাঝিতে আমন ধান চাষ করার নিয়ম থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় তা পারেননি কৃষকরা। ধান রোপণ নিয়ে কৃষক পড়ে বিপাকে। দেরিতে বৃষ্টি হলেও ইতিমধ্যে আমন রোপন লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

কটিয়াদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কটিয়াদী উপজেলায় ৬ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, আবাধ বেশি হয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় ধান চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ হাজার ৫ হেক্টর বেশি। এবারও রোপা আমনের কোন রোগ বালাই না হলে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন।

সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের খেত প্রকৃতির খেয়ালে গাঢ় সবুজ রঙ ধারণ করেছে। সবুজে ঘেরা রোপা আমনের মাঠে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন। ধানগাছ ভাল রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা খেতের ঘাস পরিষ্কার, সার ও বালাইনাশক ঔষধ প্রয়োগ ও পার্চিংসহ সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন। মাঝে মধ্যে হচ্ছে বৃষ্টি, আমন আবাদের জন্য আবহাওয়া রয়েছে অনুক‚লে। তাই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে কৃষকরা।

ধানের চারাগুলো থেকে কয়েকদিন পর বের হবে থোর। আর কিছুদিন পরই কৃষকদের আমন খেতে বের হবে মৌ মৌ গন্ধ। এর পরই সকলের নজর কাড়বে সোনালি ধান। সোনালী স্বপ্নে সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা। গৃহিণীর মুখে ফুটবে হাসি।

কটিয়াদী উপজেলার চর পুক্ষিয়া এলাকার কৃষক ইউনুছ ফকির জানায়, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় প্রথমদিকেই শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিয়ে আমন চারা রোপণ করেছি। এতে রোপণে খরচ বেড়েছে। আবার সারের দাম বেড়েছে। ডিজেলের দাম বেড়েছে। চিন্তা হচ্ছে ধানের খরচ উঠাতে পারবো কিনা।

উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের মুগদিয়া গ্রামের কৃষক জহির উদ্দিন বলেন, এবার তীব্র খরার কারণে দেরিতে রোপা আমন লাগাইছি। কিন্তু আমন আবাদের জন্য আবহাওয়া ভালো থাহায় ফসল এহন অনেক ভালো অইছে।
বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক তাইজ উদ্দিন বলেন, কয়েকদিনেই আমরার ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর অইছে। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ দেহা যায়।

জালালপুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, বর্তমানে রোপা আমন ধানের খেত সবুজে ভরে ওঠেছে। কৃষি অফিস থেকে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি। কৃষি অফিসার স্যারের নির্দেশে মাঠপর্যায়ে আমরা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সময়মত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, এবার আমন খেতে এবার রোগবালাই কম। তাই এবারও ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।

কটিয়াদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলায় শতভাগ রোপা আমন রোপণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ফলন যাতে ভালো হয়, এই জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty