ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি : শিশুকালেই বিমানের শব্দ যাকে আকৃষ্ট করতো। আকাশে বিমান উড়ে যেতে দেখলে দৌড়ে ছুটে যেতেন পিছু পিছু। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন বিমান কি ভাবে উড়ে যায় আকাশে। দৃষ্টি সীমানায় যতদূর দেখা যায় অবাক দৃষ্টিতে থাকিয়ে থাকতেন আর ভাবতেন। এ ছিল তার নিত্য দিনের ঘটনা। বিমানের শব্দে যিনি ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতেন তিনিই আজ বিশ্ব সেরা বিজ্ঞানী নতুন মডেলের চালক বিহীন হেলিকপ্টার আবিস্কারক ড. হুমায়ুন কবীর।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল নাগেরগ্রাম ও বনগ্রামে লেখাপড়া করে বর্তমানে আমেরিকার বিখ্যাত বোয়িং বিমান তৈরী প্রতিষ্ঠানের প্রধান বিজ্ঞানী। ১৯৮৬ সালে চালক বিহীন হেলিকপ্টার আবিষ্কার করে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়েছিলেন ১৯৫৫ সালে কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রামে জন্ম নেয়া বিজ্ঞানী ড. হুমায়ুন কবীর। ২৬ মে শুক্রবার শিকড়ের টানে তিনি দেশে আসেন। মঙ্গলবার রাতে কটিয়াদী রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ইউনিটি কার্যালয়ে তাঁকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ সময় তাঁর সাথে এক মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ ফ.হ আলমগীর জোয়ারদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি মো.রফিকুল হায়দার টিটুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন কটিয়াদীর কৃতী সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজ্ঞানী ড. হুমায়ুন কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন তার সহধর্মিণী ফরিদা কবির। শুরুতেই ইউনিটির সদস্যগণ অতিথিদের ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করেন।
মত বিনিময় সভায় বিজ্ঞানী ড. হুমায়ুন কবির বলেন, নিজের এলাকায় এসে ভালো লাগছে। দীর্ঘ সময় পর দেশে এসেও সকলের হৃদ্যতা ও আতিথিয়তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর সাফল্যের বিষয়ে বলেন, অদম্য ইচ্ছে শক্তি আর সাধনায় মানুষ তার স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যেতে পারে। মেধাকে সঠিক পথে কাজে লাগালে সে অবশ্যই সফল হবে। সুশিক্ষিত হয়ে একজন মানুষ যদি মেধাকে ভালো কাজে লাগায়, মেধার স্ফুরণ অগণিত মানুষের উপকারে আসতে পারে। কষ্টকে জয় করেই আমি আজ আমার অবস্থানে এসেছি।
দেশে কী বিমান তৈরী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি সম্ভব নয়। এটি অনেক অনেক ব্যয় বহুল। উন্নত দেশ ছাড়া এটি অনেক দুরূহ ও কঠিন কাজ। যদি কখনো দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত দেশের মত হয়। তখন চিন্তা করা যাবে। যে কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিমান ক্রয় করে প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়ে থাকে। আমার তৈরি ডিজাইনের কয়েকটি বিমান বাংলাদেশ সরকার ক্রয় করে তা বাণিজ্যিক ভাবে পরিচালনা করছে। এর সুফল দেশ বাসী পাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, দেশের জন্য কাজ করার ইচ্ছে আছে। স্বপ্ন দেখি আগামী প্রজন্ম হয়তো একদিন ভালো কিছু করতে পারবে। আমার নিজের এলাকায় কিছু করা যায় কিনা তাও বিবেচনায় রাখবো।
সভায় বক্তব্য রাখেন, কটিয়াদী সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম মাহফুজ, কনিষ্ঠ বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ মোস্তফা, সাংবাদিক সারোয়ার হোসেন শাহীন, ছাইদুর রহমান নাঈম, ফখর উদ্দিন ইমরান, ধ্রব রঞ্জন দাস, মাসুম পাঠান, মিজানুর রহমান, মাসুম বিল্লাহ তাহের, ডেল্টা লাইফ ইন্সুইরেন্স কোম্পানি (বীমা) কটিয়াদী এরিয়া ম্যানেজার আবদুল মান্নান স্বপন প্রমুখ। এ সময় সংগঠনের সকল সদস্য ও শুভাকাঙ্খীগণ উপস্থিত ছিলেন।