করিমগঞ্জ প্রতিনিধি, দিলোয়ার হোসাইন :
প্রতি বছরই শুস্ক মৌসুমে ফসলী জমির উর্বরতার বিষয়টিকে উপেক্ষা করে সারা দেশের ন্যয় কিশোরগঞ্জেও চলে অবৈধ মাটি কাটার ব্যবসা। এবরও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গুণধর গ্রামের শামীম এবং কদিমমাইজহাটি গ্রামের মানিক মিয়ার নেতৃত্বে এসব মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি কাটার প্রতিবাদ করলে তার অনুসারীরা এলাকার লোকজনকে মারধর ও বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মুকশেদুল হক বলেন, কৃষি জমির মাটি কাটা কৃষি জমির জন্য একটি হুমকি। মাটির বিভিন্ন স্তরের মধ্যে উপরের অংশ, যেখানে গাছ পালা জন্মে। এ অংশটিকে টপ সয়েল বলা হয়। কৃষির জন্য উপযোগী এক ইঞ্চি টপ সয়েল তৈরী হতে ৫শ’ বছরের বেশি সময় লাগে। ফসলি জমির উপরিভাগের ১০ থেকে ১২ ইঞ্চির মধ্যে মাটির জৈব উপাদান থাকে। সেই মাটি কাটা হলে জমির জৈব উপাদান চলে যায়। এতে জমির স্থায়ী ক্ষতি হয়। ফসলি জমির মাটি কাটা তাই বেআইনি।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টায় দেখা যায়, উপজেলার বড় হাওর গুণধর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কৃষি জমিতে রাখা হয়েছে মাটি কাটার বেকু বা এক্সভেটর (খননযন্ত্র)। মাটি আনা-নেওয়া করা হয় ট্রাক্টর, ট্রলি দিয়ে হাওরের বিভিন্ন ফসলি জমিতে গভীর গর্ত করে মাটি কাটা হচ্ছে।
এ সময় একজন ট্রাক্টর চালককে মাটি নিতে দেখা যায়, তার নাম রহিদ মিয়া। তিনি বলেন, তারা মাটি আনা নেওয়া করেন, এ জন্য প্রতি ট্রাক্টর বোঝাই মাটি ক্রেতা ৮০০ টাকা দেন।
বালু মহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন অনুযায়ী, ফসলি জমি বা উদ্ভিদ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকলে, সেখান থেকে বালু বা মাটি তোলা যাবে না।
অভিযোগের বিষয়ে মানিক মিয়া জানান, তিনি মাটি ব্যবসায় জড়িত নন। তবে মাটি কাটার যন্ত্রে তার বিনিয়োগ আছে, এতে তার কিছুটা লাভ হয়।
করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি, অতি: দায়িত্বে) তাহমিনা আক্তার বলেন, অবৈধ মাটি কাটার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।