স্টাফ রিপোর্টার, আবু তাহের : করিমগঞ্জে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভূয়া নিয়োগপত্র ও যোগদানপত্রের মাধ্যমে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীকে গাছে বেঁধে মারধর ও এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার আ. ছালাম মুন্সী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন কাগজে কলমে ১৯৯১ সালের জানুয়ারি থেকে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন। বেসরকারী হিসেবে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হলে পরবর্তীকে বিদ্যালয়টি সরকারি করা হয়।
অভিযোগে জানানো হয়েছে, মো. বেলায়েত হোসেন ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ব্র্যাকে কর্মরত ছিলেন।
এরপর তিনি ব্র্যাকের চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে ভূয়া নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্র তৈরি করে সংশ্লিষ্ট অফিসকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ে চাকুরি শুরু করেন। তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি মো. বেলায়েত হোসেনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়নি। বিদ্যালয়ের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করলে এ জালিয়াতির বিষয়টি স্পষ্ট ধরা পড়বে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদেরকে বাড়ি থেকে ধরে এনে গাছে বেঁেধ নির্যাতনের অভিযোগসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৩ সালে ফয়সাল নামে বিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থীকে বেলায়েত হোসেন তার লোকজন অন্যায়ভাবে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসেন বেলায়েত হোসেনের বাড়িতে। এরপর সেখানে গাছের সাধে বেঁধে রেখে শিক্ষার্থী ফয়সালকে নির্যাতন করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক শিক্ষার্থী ফয়সালকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ বেলায়েত হোসেনকে গ্রেফতার করে। তিনদিন হাজতে থাকলেও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়নি। এমন কি হাজতে থাকাকালীন সময়ের বেতনও তিনি উত্তোলন করেছেন। এছাড়া বেলায়েত হোসেনের দুই ভাই ও তাদের স্ত্রীদেরকে বেশ কয়েকবার মারধর করার অভিযোগ রয়েয়ে তার (বেলায়েত) বিরুদ্ধে। এসব জালিয়াতি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকলেও অদৃশ্য কারণে শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন জানান, ‘অভিযোগকারী সম্প্রতি আমার জমি জোরপূর্বক দখল করেছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ সাজানো। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। একটি মহল আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মজিব আলম জানান, শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান।