প্রতিনিধি করিমগঞ্জ ঃ করিমগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা উপজেলা সাধারণ পাঠাগারটি সচল করতে গণভিক্ষা কর্মসূচি পালন করেছে একদল পাঠক। গতকাল এ কর্মসূচি পালিত হয়।
একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার হিসেবে পরিচিতি রয়েছে করিমগঞ্জ উপজেলা সাধারণ পাঠাগারের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ২০৯৪/- বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় গত বছর জুন মাসে পাঠাগারটির মিটার সহ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। এরপর থেকেই পাঠাগারটি বন্ধ আছে।
গণভিক্ষা কর্মসূচি উপলক্ষে একদল পাঠককে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রদানের অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বাটি হাতে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক ও বাজারের বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা করতে দেখা যায়।
করিমগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা পাঠাগারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম ফারুক বলেন, আমি তিনবার পাঠাগারের দায়িত্বে ছিলাম। পাঠাগারের বর্তনাম অবস্থা দেখে আমি বিস্মিত। বিদ্যুৎ বিল প্রদান না করায় সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ খুবই দুঃখজনক। আমার জানামতে, পাঠাগারের তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে।
করিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জুলহাস উদ্দিন বলেন, পাঠাগারের এই অবস্থা আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক। নেতৃত্ব নিয়ে কিছু অযোগ্য লোকজনের বাড়াবাড়ি এর জন্য দায়ী।
করিমগঞ্জ পাইলট সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, সংস্কৃতির উর্বর ভূমি করিমগঞ্জের প্রধান পাঠাগারটির অচলাবস্থা করিমগঞ্জবাসীর জন্য লজ্জা। পাঠাগার পরিচালনায় পদ পদবীর লোভ ত্যাগ করে দ্রæত এটিকে সচল করে তুলতে হবে।
গণভিক্ষায় অংশগ্রহণকারী হাসান মুহাম্মদ রণক বলেন, এটি আমাদের প্রতিকী প্রতিবাদ। আশা করছি এর ফলে পাঠাগার সংশ্লিষ্ট সকলের টনক নড়বে।
কবি রকিব অমি বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রদানে সহযোগিতা করার উদ্যেশে গণভিক্ষার মাধ্যমে আমরা ৪০০৬/- টাকা সংগ্রহ করেছি। আশা করি, এ অর্থ দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগটি পুনরায় চালু করা যাবে। সোমবার (আজ) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বকেয়া বিল পরিশোধ করে পাঠাগারটি সচল করার জোর দাবি জানানো হবে।
পাঠাগারের বিভিন্ন সদস্যের সাথে কথা বললে জানান, পাঠাগারের কমিটি, ভোটার তালিকা ও নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধের জেরে নতুন কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এর আগে পরপর দুজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পদাধিকার বলে পাঠাগারের সভাপতি সাধারণ সভার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নিলেও, স্থানীয় কতিপয় লোকের দ্বন্দের জেরে সংকট সমাধানে ব্যর্থ হন। এরপর থেকেই বেহাল দশায় রয়েছে ঐতিহ্যেবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি।