স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জের নিকলীতে পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপ‚র্বক দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টা ৩০মিনিটে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন নিকলী উপজেলার কারপাশা ইউনিয়নের নানশ্রী গ্রামের শহিদ আবু জাফর খাঁনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম খান।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, ১৯৭১ সনে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে শহিদ হন তার পিতা আবু জাফর খাঁন। পিতার মৃত্যুর দুই মাসের মাথায় মা’ও মারা যান। তারা রেখে যান পাঁচ দাগে (১০১৪, ১০১২, ১০১১, ১০১৩ ও ১০১০) ১৩১ শতাংশের বসতবাড়িসহ অনেক সম্পত্তি।
পিতা মাতার মৃত্যুর পর সিরাজুল ইসলাম খাঁন বড় বোনদের বাড়িতে থেকে বড় হন এবং সরকারি চাকরি জুটিয়ে এলাকার বাইরে চলে যান। তার ছোট ভাই যুবরাজ খাঁন চলে যান দেশের বাইরে। দীর্গদিন দেশের বাইরে কাটিয়ে ছোট ভাই যুবরাজ চলে আসেন দেশে। সিরাজুল ইসলাম খাঁনও স¤প্রতি সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে চলে আসেন নিজ এলাকায়।
পৈত্রিক ভিটিতে একটি ঘর তৈরির সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু এতে বাধা দেন তাঁর চাচতো ভাই বাবু ও তার পরিবারের লোকসহ এলাকার একটি সন্ত্রাসীচক্র। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক শালিস হয়। সম্প্রতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক আয়াজ, কারপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাকি আমান ও কয়েক জন ওয়ার্ড মেম্বারসহ এলাকার গণ্যমান্য ১১ জন মিলে জমির দলিল ও সমস্ত কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে সত্যতা মিল পাওয়ায় সিরাজুল ইসলাম খাঁনের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু শালিসি লোকজন চলে যাওয়ার পর প্রভাবশালী চক্রটি রায়কে অমান্য করে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না শহিদ পরিবারের লোক জনকে।
এ নিয়ে আদালতে মামলা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের প্রতিনিধি সরেজমিন এলাকায় গিয়ে তদন্ত করে সিরাজুল ইসলাম খাঁনের পক্ষে আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশে সিরাজুল ইসলাম খাঁন একটি বসতঘর নির্মাণ করেন। নিজ জায়গা থেকে চলে আসার পর গত ২৫ এপ্রিল তাঁর চাচতো ভাই বাবু ও তার পরিবারের লোকসহ সন্ত্রাসীরা বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তারা বাড়িতে গেলে চাচতো ভাই বাবু ও সন্ত্রাসীরা হত্যার হুমকি দেয় এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।
এদিকে মালামাল লুটসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ৫ মে কিশোরগঞ্জ আদালতে মো. যুবরাজ খান, পিতা শহীদ আবু জাফর খান, সাং নানশ্রী, নিকলী, কিশোরগঞ্জ বাদী হয়ে দিদার আহাম্মদ বাবু, দেলোয়ার আহাম্মদ পায়েল, শাহীন, ফাহিম, দিলুয়ার, সাজেদা আক্তার পনি, সাদেকা আক্তার পবি, আঃ সাত্তার, সর্ব সাং নানশ্রী, নিকলী, কিশোরগঞ্জকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার আসামি দিদার আহাম্মদ বাবুর সাথে কয়েক বার ফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। এদিকে শালিসি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক আয়াজ এবিষয়ে তিনি জানা, আমরা চেষ্টা করেছি কিন্তু সফল হতে পারিনি বিধায় তারা আদালতের দারস্ত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজুল ইসলাম খাঁনের ছোট ভাই যুবরাজ খাঁন, বোন শামছুন্নাহার খানম, আনোয়ারা খানম, নূরুন্নাহার খানম রেখা, শাহানা খানমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।