মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন

কিশোরগঞ্জের ৩২২ কমিউনিটি ক্লিনিকেরস্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন ৬ মাস যাবৎ বন্ধ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৯ Time View

স্টাফ রিপোর্টার, আহসানুল হক জুয়েল : ছয় মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না কিশোরগঞ্জ জেলার ৩২২ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)। বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
জানা গেছে, উন্নয়ন খাত থেকে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তর নিয়ে জটিলতায় ছয় মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ আছে তাদের। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে তারা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। গত আগস্ট মাসে চাকরি রাজস্ব খাতে নেওয়ার দাবিতে ঢাকায় আন্দোলন করে সিএইচসিপিরা। সে সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।

কিশোরগঞ্জ জেলা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সমিতির সভাপতি এম. আর. রাজিব বলেন, আমাদের জেলার ১৩ উপজেলায় ৩২২টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩২২ জন হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কর্মরত আছি। আমরা এক যুগ ধরে একই বেতনে চাকরি করছি, কোনো পরিবর্তন নেই। রাজস্ব খাতে নেওয়ার কথা বললেও এখন বেতনই পাচ্ছি না। তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী উন্নয়ন খাত থেকে চাকরি রাজস্ব খাতে যেতে স্বাস্থ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন হয়।

সর্বশেষ স্বাস্থ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব কমিটির অনুমোদন হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কচ্ছপ গতির কার্যকলাপের ফলে আমরা বেতন পাচ্ছি না এবং উন্নয়ন খাত থেকে চাকুরি এখনো রাজস্ব খাতে হস্তান্তর হয়নি। এই অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। অনেকেই ছেলেমেয়েদের পড়া লেখার খরচ, পরিবারের অসুস্থ স্বজনদের চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন না। দ্রুত বকেয়া বেতনসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করছি।’

কিশোরগঞ্জ জেলা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম তুহিন বলেন, আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছি। অথচ নিজেরা অর্থ কষ্টে ভুগছি আমরা। বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি।’

জানা গেছে, ২০১১ সালে সিএইচসিপি (গ্রেড-১৪) হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রধানের দায়িত্বে আসেন একজন স্বাস্থ্য কর্মী। স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টিসেবা সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে সারাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে কাজ করেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)। মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, টিকা কর্মসূচি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাড়ানোসহ প্রায় সব ধরনের স্বাস্থ্যগত সেবা পাওয়া যায় দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে। যার মূল দায়িত্বে থাকেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার।

দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে সরকারের কমিটমেন্ট জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য নিশ্চিত এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য রক্ষায় এক অভাবনীয় সফলতা এনে দিয়েছে এই সিএইচসিপিরা। প্রতিটি সিএইচসিপি তার শ্রম, মেধা, আন্তরিকতা আর দায়বদ্ধতাকে মাথায় নিয়ে স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উন্নয়ন খাত থেকে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তর নিয়ে জটিলতায় শুধু কিশোরগঞ্জ নয়, সারাদেশে প্রায় ১৪ হাজার সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সুনাম বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে পড়লেও গত ১৩ বছরে তাদের এক টাকাও বেতন বৃদ্ধি পায়নি। এ ব্যাপারে জেলার সকল সিএইচসিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty