স্টাফ রিপোর্টার : জুন জুড়ে ক্রিকেট প্রেমিদের মাতাতে মাঠে গড়িয়েছে টি-টুয়েন্টি বিশকাপ-২০২৪। সুদূর মার্কিন মুল্লুকে বসেছে এবারের আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতির দুই দিকপাল বিশ্ব মোড়ল স্বাগতিক আমেরিকা এবং বৈরি প্রতিবেশি কানাডা। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬টায় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে। উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাপুয়া নিউ গিনির মধ্যে। এবারের আসরে ৪টি গ্রপে ২০টি দল অংশ নিচ্ছে।
আজ শুরু হলেও প্রিয় টাইগারদের খেলা দেখতে বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমিদেরকে অপেক্ষা করতে হবে ৮ জুন পর্যন্ত। সেদিন ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। আর ফাইনালের আগে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে নাউস কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে।
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল স্বাগতিক দলের বিপক্ষে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম ২টিতেই হেরে বসে। শেষ ম্যাচ জিতে মুখরক্ষা জয় পেলেও টাইগারদের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্র্রে উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ দল টি-টুয়েন্টি ফরমেটে ২টি হোম সিরিজ খেলে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে অম্লমধুর অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্বকাপে পাড়িজমায়।
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরমেন্সও মিশ্র অনুভ’তির। ২০০৭ সালের অভিষেক আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে ১৬৪/৮ রান। জবাবে আফতাব আহমেদের ৪৯ বলে ৬২ রান বাংলাদেশের জয়কে সহজ করে তোলে। সাকিব আল হাসান ৩৪ রানের বিনিময়ে লাভ করেন ৪ উইকেট।
দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭ উইকেটের পরাজয় বরণ করতে হয়। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ১৪৪ রানে অলআউট হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৬/৩ (১৮) করে। এ ম্যাচেও আফতাব আহমেদ ১৪ বলে ৩৬ রান করেন, রাজ্জক ২৬ রানে নেন ২ উইকেট।
২০০৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া ২টি ম্যাচেই পরাজিত হয় বাংলাদেশ। প্রথমে ভারতের কাছে ২৫ রানে পরে আয়ারল্যান্ডের কাছে ৬ উইকেটে। ২০১০ সালের টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্টেও বাংলাদেশ জয়ের মুখ দেখেনি। পাকিস্তানের কাছে ২১ রানে এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২৭ রানে হারে।
২০১২ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ আসরেও জোটে পরাজয়ের গøানি। সেবার শক্তিশালী নিউজিল্যান্ড ৫৬ রানে এবং পাকিস্তান ৮ উইকেটে হারায় টাইগারদের।
২০১৪ সালে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের পঞ্চম আসর বসে বাংলাদেশে। হংকং-এর মতো দুর্বল প্রতিপক্ষের কাছে ২ উইকেটের পরাজয় সত্তে¡ও আফগানিস্তান এবং নেপালকে হারানোর সুবাদে প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে টাইগাররা। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে একে একে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধরাশায়ী হয়। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ আসরে নেদারল্যান্ডসকে ৮ উইকেটে এবং ওমানকে ৫৪ রানে হারায় বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের সাথের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে পাকিস্তনের কাছে ৫৫ রানে, অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে, ভারত ১ উইকেটে এবং নিউজিল্যান্ড ৭৫ রানে হারে বাংলাদেশ।
২০২১ সালের সপ্তম আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের কাছে ৬ উইকেটে হেরে বসলেও ওমানকে ২৬ রানে এবং পাপুয়া নিউ গিনিকে ৮৪ রানে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে যথারীতি শ্রীলংকা ৫ উইকেটে, ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে, দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে এবং অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে হারায় বাংলাদেশকে। এবারের আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং নেদারল্যান্ডস। তাই অপেক্ষা করতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা শ্রীলঙ্কাকে টপকিয়ে গ্রপে শীর্ষ দুয়ে জায়গা করে নিতে পারে কী না প্রিয় বাংলাদেশ দল। শুভকামানা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।