এফএনএস : গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিসের পশ্চিমে অবস্থিত আল-মাওয়াসিতে গতকাল শনিবার ইসরায়েলি সামরিক হামলায় ৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, নিহতের সংখ্যা ৭১ জন। এ ছাড়া কয়েকজন গুরুতর আহতসহ ২৮৯ জন আহত হয়েছে। আলজাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার একজন মুখপাত্র আলজাজিরাকে বলেছেন, ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে মনোনীত অঞ্চলে ইসরায়েল যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালিয়েছে। বাস্তুহারাদের তাঁবু ও পানি পরিশোধন ইউনিটকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, মধ্য খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলায় তাদের অগ্নিনির্বাপণ ও ও উদ্ধার বিভাগের উপপরিচালক নিহত এবং অন্য আট সদস্য আহত হয়েছেন।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা দল একটি আবাসিক ভবন থেকে লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টার সময় ইসরায়েলি বিমান আবারও ওই এলাকায় বোমাবর্ষণ করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ফিলিস্তিনিরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে লোকজনকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। আহতদের মধ্যে শিশু ও প্যারামেডিকরাও রয়েছে। এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের অসমর্থিত প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে লক্ষ্যবস্তু করতে এ হামলা চালানো হতে পারে। গাজার মধ্যাঞ্চলে দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আজউম জানান, হামলাটি ‘ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সংঘটিত একটি নতুন গণহত্যা’। ওই এলাকায় ‘পাঁচটি বোমা ও পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র’ দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
আহতদের নাসের ও কুয়েত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘যে এলাকাটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, সেখান থেকে যে দৃশ্যগুলো আসছে, তা অবিশ্বাস্যভাবে রক্তাক্ত ও বিধ্বংসী।’ নাসের হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা আলজাজিরাকে বলেছেন, মেডিকেল টিমের আর কোনো আহত রোগী গ্রহণের ক্ষমতা ছিল না। বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলগুলো আক্রমণের জায়গায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আল-মাওয়াসি এলাকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বারবার হামলা চালিয়েছে। মে মাসের শেষের দিকে একটি হামলায় বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর তাঁবুতে আঘাত করার পর কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়। জর্দানের আম্মান থেকে আলজাজিরার হামদাহ সালহুত বলেন, ‘আমরা বারবার এমন এলাকায় আক্রমণ দেখেছি, যেখানে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি রয়েছে। এটি এমন একটি কৌশল, যা সাধারণত ইসরায়েলি বাহিনী ব্যবহার করে।
এটিকে অনেক বেসামরিককে হত্যার ন্যায্যতা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’ এর আগে বেসামরিক প্রতিরক্ষা দল শুক্রবার বলেছিল, অবরুদ্ধ ভ‚খÐের বিধ্বস্ত উত্তরাঞ্চলে গাজা সিটির কিছু এলাকা থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সরে যাওয়ার পর অন্তত ৬০টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।