এফএনএস : ঘোড়া জবাই করে মাংস খাওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়ে যায়। এই ঘটনায় এলাকার মুসল্লি¬দের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করেছেন। যারা মাংশ খেয়েছিল স্থানীয়দের ভয়ে দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে প্রতিবাদের মুখে এখন অনেকেই এলাকা ছাড়া।
ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের চড় পেঁচাকোলা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জুন বেড়া শাহা পাড়ার মহিউদ্দিন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি মানিক হোসেন, আবদুস সোবহান, হিরো আলমসহ কয়েকজন যুবকদের নির্দেশ দেন ঘোড়া কেনার জন্য। তাঁর কথা মত ছয় সাতজন যুবক এক হাজার টাকা দিয়ে একটি ঘোড়া কিনে আনেন। এরপর সেই ঘোড়া জবাইয়ের আদেশ দেওয়া হয় তাদের।
যুবকরা বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের চড় পেঁচাকোলা নদীর পাড়ে নিয়ে আনন্দ উল্লাস করে ঘোড়াটিকে জবাইয়ের ভিডিও ধারণ করে এবং রান্না করে সবাই মিলে খায়। এরপরই শুরু হয় এলাকায় সমালোচনা ও মুসল্লি¬দের মধ্যে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২জুলাই) বিকেলে পেঁচাকোলা চার মাথা মোড় এলাকায় মুসল্লি ও সাধারণ জনগণ ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিয়ে সড়কে নেমে আন্দোলন করেন ও সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
ঘোড়ার মাংস খাওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভকারী হাটুরিয়া চারমাথা বাজারের ব্যবসায়ী আলামিন, ওই গ্রামের আশরাফুল আলম খোকন ও আবু জাফর বলেন, যার নির্র্দেশে ঘোড়ার মাংশ খাওয়া হয়েছে এবং এর সাথে জড়িতদের আমরা শাস্তি চাই। আমাদের এলকায় ঘোড়ার মাংস খাওয়া চলবেনা। বেড়া উপজেলার মডেল মসজিদের ইমাম মোস্তফা কামাল এবং বেড়া শাহ্ পাড়া মাসজিদের ইমাম শাহারিয়ার বিন জাকারিয়া বলেন, হাদিস শরীফে ঘোড়ার মাংশ খাওয়া এবং না খাওয়ার পক্ষে এবং বিপক্ষের দুই ধরনেরই অনুমতির কথাই বলা হয়েছে।
সাধারণ ক্ষেত্রে ঘোড়ার মাংশ খাওয়া মাকরুহ। তবে এ থেকে আমরা বিরত থাকবো এবং পরিবেশ ও সমাজ যাতে উত্তেজিত না হয় সে ব্যাপারে জানার চেষ্টা করবো। বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান জানান, সম্প্রতি বেড়ার চড় পেঁচাকোলা এলাকায় ঘোড়া জবাইয়ের ভিডিও দেখেছি। ঘোড়াটি জবাই করে নিজেরাই ভক্ষণ করেছে এবং এটার ভিডিও ধারন করেছেন।
সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এতে করে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আমি ধর্মীয় বিষয়ে নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না আসলে ঘোড়ার মাংস খাওয়া যাবে কিনা। আমাদের দেশে ঘোড়া সংখ্যা বেশি না। আমরা যদি এভাবে ঘোড়াকে মাংস হিসেবে খাই তাহলে একসময় আমাদের দেশে ঘোড়ার সংখ্যা বিলুপ্তির পথে চলে যাবে। তবে আমি ঘোড়ার মাংশ খাওয়ার জন্য নিরুৎসাহিত করবো।