ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, মো. মিজানুর রহমান :
পাকুন্দিয়া উপজেলার কালিয়াচাপড়া আদর্শ পাড়া বাজার নিয়ে চলছে চরম নৈরাজ্য। ইজারাদার সরকারি বিধি মোতাবেক যথাযথ নিয়মে বাজারের ইজারা নিলেও বঞ্চিত হচ্ছেন টোল আদায় থেকে। পক্ষান্তরে একটি দুর্বৃত্তের দলের চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে বাজারের ব্যবসায়ীরা।
মহাল ও গো-হাটের জন্য ইজারাকৃত সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে প্রভাবশালী একটি মহল। উপজেলার মধ্যে এটি একটি প্রাচীন ও বৃহৎ বাজার। বাজারটি তিরানব্বই লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইজারা নেন দ্বীন মুহাম্মদ শাহীদ।
বাজারের সাথে কয়েকটি স-মিল থাকায় মিলের মালিক ও ব্যবসায়ীরা ইজারাকৃত সরকারি জায়গায় ফেলে রাখছে গাছের গুড়া ও খÐাংশ। যে কারণে গো-হাটের দিন বেচাকেনা ও চলাফেরা করতে কষ্টের সম্মুখিন হন ব্যবসায়ীরা। অপর দিকে হাটের জমির মালিকানা দাবি করে স্থানীয় একটি শ্রেণি জোরপ‚র্বক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। ইজারাদারের দাবি একশ্রেণির চাঁদাবাজদের জন্য প্রয়োজনীয় টোল আদায় করতে না পেরে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। নিয়মিত অবৈধ চাঁদাবাজি চলতে থাকলে পরবর্তী ইজারা ডাকে প্রভাব পরতে পারে এবং সরকারের রাজস্ব হারানোর আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।এছাড়া বাজারের তহসিল ঘরটিও বিভিন্ন স্থানে ভেঙে বেহাল দশা।
প্রভাবশালী মহলটি ইজারাকৃত সরকারি জায়গায় জোরপ‚র্বক অবৈধ ঘর নির্মাণ করার কারণে দখল হচ্ছে সরকারি জমি, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ইজারাদার।
অবৈধ স্থাপনার কারণে বাজারটি দিনদিন সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। হাটের দিন বিভিন্ন মহালে ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল, সবজি, মাছ, কাপড়-চোপড়সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে বসতে পারছেন না। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন স্থানীয়রা। প্রতি মঙ্গলবার বসে সাপ্তাহিক এ হাট।
বাজারের বিভিন্ন মহালে সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা, ঘর ও গুদামের তথ্যসম্বলিত ২১ জনের নামে চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পাকুন্দিয়া উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) বরাবর ইজারাদার দ্বীন মুহাম্মদ শাহীদ একটি তালিকাও জমা দিয়েছেন। তবে কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি। এছাড়া পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের ভ‚মি উপ-সহকারি, উপজেলার এসিল্যান্ড, ইউএনও ও জেলা প্রশাসককে বিষয়টি বারবার লিখিতভাবে অবহিত করার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে জানান ইজারাদার দ্বীন মুহাম্মদ শাহীদ। এ নিয়ে সচেতন মহলে চলছে তীব্র সমালোচনা।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন ক্ষুদে ব্যবসায়ী এ প্রতিবেদককে জানান, হাটের দিন দু’বার বিক্রিত পণ্যের টাকা দিতে হয়। প্রথমত ইজারাদারকে দিতে হয় তার নির্ধারিত পরিমাণের টোল, দ্বিতীয়ত একটি শ্রেণিকে দিতে হয় চাঁদা। এ নিয়ে ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা হাটের দিন এ বাজারে আসতে অনীহা প্রকাশ করায় একসময় প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এ হাটটি বন্ধ হয়ে গেলে স্থানীয়রা ক্ষতির সম্মুখীন হবে এমনটিও জানান ব্যবসায়ীরা। দ্রæত অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙে পেশিশক্তির দ্বারা নেয়া চাঁদাবাজি বন্ধ করে বাজারটিকে রক্ষা করার দাবি জানান ইজারাদার, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাহ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মামুন সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মামুন সরকার বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের তহশিলদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।