মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পাকুন্দিয়ায় চোখের আলো হারিয়েছে মাসুদ

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২০ Time View

প্রতিনিধি, পাকুন্দিয়া, মুহিব্বুল্লাহ বচ্চন : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ২০ জুলাই কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পুলিশের সাথে ছাত্র-জনতার দিনব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এসময় মাসুদ মিয়া (২৪) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়। পুলিশের ছররা গুলিতে তার বাম চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাসুদ মিয়া উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা মুনিয়ারীকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। সে ওই গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে এবং পেশায় একজন ট্রাকচালক।

মাসুদ অসুস্থ পিতার একমাত্র ছেলে। চার সদস্যের পরিবারের ভরণ-পোষণের ভার মাসুদের ওপর। ট্রাক চালানোর আয়ে চলতো মাসুদের পরিবার। এক চোখের আলো হারিয়ে মাসুদ এখন কর্মহীন। দুই মাসেরও অধিক সময় ধরে মাসুদ ট্রাক চালাতে পারছেন না। কবে পারবেন সেটাও অনিশ্চিত। এতে মাসুদের পরিবারে দেখা দিয়েছে আর্থিক সংকট। একমাত্র ছেলের এমন অবস্থা দেখে তার পরিবার এখন হতাশাগ্রস্ত।

জানা গেছে, গত ২০ জুলাই পাকুন্দিয়া পৌরসদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন মাসুদ মিয়া। এসময় ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ ছররা গুলি চালায়। এতে মাসুদ মিয়ার বাম চোখে ও মুখে তিনটি গুলি লাগে।

ওইদিনই তাকে কিশোরগঞ্জের শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চোখের গুলি বের হলেও চোখে দেখতে পান না মাসুদ। ছয় মাস পর আরও একটি অস্ত্রোপচারের কথা জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু চোখের আলো ফিরবে কিনা সেটা নিশ্চিত নয়।

পরিবার স‚ত্রে জানা গেছে, মাসুদের বাবা হানিফ মিয়া গাড়ি চালাতেন। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ। গাড়ি চালাতে পারেন না। মাসুদ মিয়া কাঁচামাল বহনের ট্রাক চালান। মাসুদের আয়েই তাদের সংসার চলতো। দুই বোন ও মা-বাবা নিয়ে মাসুদের পরিবার। এক বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মাসুদ অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আর গাড়ি চালাতে পারছেন না। এর ফলে ধার-দেনা কোনো রকমে চলছে তার পরিবার।

মাসুদের বাবা হানিফ মিয়া বলেন, আমি অসুস্থ। গাড়ি চালাতে পারিনা। মাসুদ গাড়ি চালিয়ে যা আয়-রোজগার করে তা দিয়েই কোনো রকমে সংসার চলছিল। ছেলের এমন অবস্থায় আমরা খুবই চিন্তিত।

মাসুদ মিয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে চোখ হারিয়েছি। এখনও দুটি গুলি রয়ে গেছে। অস্ত্রোপচার করে বের করতে হবে। আমার চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জের সমাবেশে বিএনপি ২০ হাজার টাকা অনুদান দেয়। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা মেলেনি। ছয় মাস পর আরও একটি অপারেশন করাতে হবে। তবে আলো ফিরবে কী-না সেটা নিশ্চিত করেনি চিকিৎসক।

তিনি আরও বলেন, এক চোখে আলো হারিয়ে আমার জীবন এখন অন্ধকার। পরিবারকে কিভাবে সাপোর্ট দিব সেটা ভাবতেই কষ্ট লাগছে।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty