মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন

ছোট ভাইকে কিডনি দিয়ে বাঁচাতে চায় বড় ভাই: অর্থাভাবে অনিশ্চয়তায় কিডনি প্রতিস্থাপন

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪০ Time View

প্রতিনিধি, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) ক.ম. মুহিব্বুল্লাহ বচ্চন : বিশ্বায়ন এবং যান্ত্রিক যুগে স্বার্থের জন্য পরিবারে ভাইদের মাঝে সম্পর্ক নষ্ট হতে দেখা যায় হর-হামেশায়। আজকাল অধিকাংশ পরিবারেই ঝগড়া-ঝাটির চিত্র এখন নিত্ত দিনের ঘটনা।

কিন্তু তারই উল্টো ব্যতিক্রমধর্মী এক ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার একটি পরিবারে। উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের হোসেন্দী চরপাড়া গ্রামের মৃত আদিলুজ্জামানের পরিবার এমন বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

চার ভাইয়ের সংসারে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট রেখেছে যুগ যুগ ধরে। শুধু তাই নয় মৃত্যু অবধি এই সম্পর্ক তারা ধরে রাখতে চান। আর তাই বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তারা আবার নতুন করে জানান দিচ্ছেন ভাইদের সম্পর্কের গভীরতার কথা। তবে শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারবেন কিনা এ নিয়ে ভাইদের মাঝে তৈরী হয়েছে আকাশ সম চিন্তার ভাঁজ।

পরিবারের ছোট ভাই মোঃ আরিফুজ্জামান (৪৫) ছোট একটি ফার্মেসি ব্যবসা করে পরিবার চালাতেন। তাদের সংসারে ১২ বছর এবং ৭ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ছয় মাস আগে আরিফুজ্জামান শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় তাঁর দুটো কিডনি বিকল হয়ে গেছে।

প্রাথমিকভাবে ডাক্তার তাকে ডায়ালাইসিসের পরামর্শ দিলেও পরবর্তীতে তাকে একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। গত ছয়মাস যাবত তিনি প্রতি সপ্তাহে ২ বার কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করছেন।

এতে তাঁর প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এ পর্যন্ত ডায়ালিসিস সহ তার চিকিৎসায় ৪ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। মোঃ আরিফুজ্জামান তাঁর পরিবার পরিচালনার একমাত্র অবলম্বন ফার্মেসিটিও বিক্রি করে দিয়েছেন।

তিনি জানান, তাঁর পরিবারের বাকী তিন ভাইও খুব একটা সচ্ছল না। তারাও যার যার সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এভাবে আর কত দিন। ছোট ভাইকে বাঁচাতে তাঁর বড় ভাই মোঃ আনিসুজ্জামান (৫০) তার একটি কিডনি দিতে সম্মতি দিয়েছেন। তিনি বেসরকারি একটি কোম্পানীতে গাড়ি চালকের কাজ করেন।

কিন্তু এতেও দেখা দেয় দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে প্রায় ৫/৬ লাখ টাকার মতো খরচ লাগবে। নিজেদের শক্তি সামর্থ্য ইতোমধ্যে চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করে ফেলেছেন। ভাইয়েরা কি করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না।

পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা পাকুন্দিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন (ছোটন) বলেন, গ্রামে থাকা পরিবারটির একসময় খুবই সচ্ছল ও সম্ভান্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে নিম্ন মধ্যবিত্তের কাতারে রয়েছে। কারো কাছে কোনোদিন কিছু চাওয়ার অভ্যাস নেই তাদের। কিন্তু ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে এখন চক্ষু লজ্জা উপেক্ষা করে দেশের বৃত্তবান লোকদের কাছে সাহায্যের হাত পেতেছেন।

কিডনি দাতা বড় ভাই মোঃ শরিফুজ্জামান বলেন, আমার ভাইকে বাঁচাতে এবং ভ্রাতৃত্বের এই বন্ধন যাতে ভেঙ্গে না যায় সেজন্য সকলকে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী আর্থিক সহযোগিতা করে একটি প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। আর্থিক সহযোগিতা পাঠাতে বা যোগাযোগ করতে : বড় ভাই আনিছুজ্জামানের নাম্বার ০১৭১৬৭৬১৩৭৯ (বিকাশ), রোগীর নাম্বার ০১৭১২১৭৬২৬৯।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty