প্রতিনিধি কটিয়াদী, ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে শিবনাথ সাহার বাজার সংলগ্ন কুড়িখাঁই নদীর উপর নির্মিত প্রাচীন ব্রিজটি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ব্রিজের মাঝে বড় গর্ত হয়ে ভেঙে যাওয়ায় এখন মরণ ফাঁদ হয়েছে জনসাধারণের জন্য। ব্রিজের দু’পাশের রেলিং নেই, খসে পড়েছে পিলারের আস্তরণ ও ইট।
কয়েকস্থানে ভেঙে গেছে পাটাতনের অংশ। ঝুঁকিপ‚র্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী ব্রিজের উপর দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ সর্বসাধারণ। যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
গত একদশক ধরে নির্বাচনের আগে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানগণ ব্রিজটি প‚র্ণনিমানের প্রতিশ্রæতি দিলেও নির্বাচনের পরে আর কেউ খোঁজ খবর নেই না। ব্রিজটি পৌর সভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যবর্তী হওয়ায় দায় নিচ্ছে না কেউ।
অতীব জন গুরুত্বপ‚র্ণ এই ব্রিজের উপর দিয়ে বোয়ালিয়া, নামা বোয়ালিয়া, তেলিচারা, কাহেতেরটেকী, ভাংনাদী, চারিয়া, দড়িচারিয়া, মাগুরা, কুড়িখাঁই, চাতল, মুমুরদিয়া, জোয়ারিয়া ও পিপুলিয়াসহ অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে থাকে। ব্রিজ পাশেই রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী বিশাল বাজার।
ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবচেয়ে বেশি। ব্রিজের পাশেই শাহ শামসুদ্দিন সুলতান বোখারী (র.) মাজার। প্রতি বছরেই এ মাজারে ওরস উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী এক বিশাল মেলা জমে। চারশত বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলায় দ‚র-দ‚রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও মেলার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে এই ব্রিজ দিয়ে।
এলাকাবাসীর দাবি আমাদের কোন এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র না থাকায় কারো কাছে বলার জায়গা পাচ্ছি না। যেন দেখার কেই নেই। সেতুটি রেলিং না থাকায় বেশ কয়েকবার নববধূ নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে সাময়িক চলাচলের উপযোগীসহ স্থানীয়ভাবে পুনঃনির্মাণ বা একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে এলাকাবাসী।
শিবনাথ সাহার বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সেতুটি ঝুঁকিপ‚র্ণ থাকায় বড় মালবাহী গাড়ি দিয়ে মালামাল আনে পারছি না। লেবার দিয়ে মালামাল বাজারে আনতে বাড়তি কেয়ারিং খরচ বহন করতে হচ্ছে। নির্বাচনের আগে অনেকেই এসে বলে যায় সেতুটি পুণরায় নির্মাণ করবে। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে আর কেউ থাকিয়েও দেখেনা সেতুটি।
অটোরিক্সা চালক মোহাম্মদ আলী জানান, প্রতিদিন এই ব্রিজে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ী চালাতে হয়। একদিক থেকে গাড়ী নিয়ে আসলে অপর প্রান্তের গাড়ী পারাপারে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। রাতের বেলা এ ব্রিজে পারাপারে খুবই ঝুকিপ‚র্ণ হয়ে পড়ে। যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অনতু বল জানান, সেতুটি পুনঃনির্মাণের জন্য প্রকল্পপ্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।