মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

টাঙ্গাইলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি এইচএসসির ২২ পরীক্ষার্থী

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪
  • ৮৯ Time View
cÖwZKx Qwe

এফএনএস (টাঙ্গাইল) : টাঙ্গাইলের ভ‚ঞাপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও এক শিক্ষকের প্রতারণার কারণে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি ২২জন পরীক্ষার্থী।

রোববার সকালের পরীক্ষা শুরুর আগে নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রী কলেজের ২২জন পরীক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ হয়ে নিকরাইলের পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে গিয়ে আন্দোলন শুরু ভাঙচুর করতে থাকে। পরে পুলিশের সাথে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিনা কারণে পুলিশের সদস্যরা পরীক্ষার্থীদের মারপিট করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় কেন্দ্রের বাইরে গেটে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অভিভাবকরাও কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীদের শান্তনা দিচ্ছেন আর দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবী জানাচ্ছেন।

জানা গেছে, উপজেলার নিকরাইল শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজ কর্তৃপক্ষ এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত টাকার চেয়ে বাড়তি টাকা দাবী করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকার করে। পরে পরীক্ষার্থীরা ওই কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন এই সুযোগে ২২জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩হাজার টাকা নেয় ফরম পূরণের জন্য।

কিন্তু পরবর্তিতে ওই শিক্ষার্থীদের বোর্ড থেকে কোন রেজিস্ট্রেশন কার্ড বা প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি শিক্ষার্থীদের। শনিবার ২২জন পরীক্ষার্থী কলেজে গিয়ে প্রবেশপত্র নিতে গেলে তাদের ফরম পূরণ হয়নি বলে জানিয়ে দেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের শিক্ষক লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি।

শমসের পরীক্ষা ডিগ্রী কলেজ থেকে নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলিয়ে এই পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় ১৭১ জন অংশগ্রহণ করেছে।

এ ঘটনায় প্রবেশপত্র বাতিল হওয়া পরীক্ষার্থীরা সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে। পরে কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাথে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি প্রশাসনের আশ্বাসের পর পরীক্ষার্থীরা আন্দোলন শেষ করে কেন্দ্র ত্যাগ করে।

পরীক্ষার্থীরা জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবীকৃত ৮ হাজার টাকা দিতে না দেয়া পারায় ফরম পূরণ করেনি। পরে কলেজের বাংলা প্রভাষক লোকমানের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে জালিয়াতির শিকার হয়েছি। টাকা দিয়েও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারলাম না। আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকের প্রতারণার কারণে। আমরা যেকোন মূল্যে পরীক্ষা দিতে চাই।

শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন বলেন, ওই ২২জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ হয়েছে। সকল প্রমাণপত্র আমার কাছে রয়েছে। কিন্তু গতকাল রাতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বোর্ডে ফোন করে ২২জন পরীক্ষার্থীর ফরম বাতিল করেছেন।

তবে শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আক্তারুজাজামান জানান, পরীক্ষার্থীরা কলেজে কোন যোগাযোগ করেনি। অনেক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ফরম পূরণ করা হয়েছে। বাড়তি ফি নেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সত্য না।

ভুঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রে আন্দোলন করে। পরে কেন্দ্র অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কমর্কর্তা মো. মামুনুর রশীদ জানান, ২২জন পরীক্ষার্থী কলেজ কর্তৃপক্ষের অগোচরে এবং অবৈধভাবে এইচএসসি ফরম পূরণ করা হয়েছে বলে কলেজ অধ্যক্ষ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই ২২জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ বাতিল করায় তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty