এফএনএস : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে, আর তার রানিংমেট মনোনীত হয়েছেন ওহাইও রাজ্যের সিনেটর ৩৯ বছর বয়সি জেডি ভ্যান্স, যিনি একসময় ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক ছিলেন। গত সোমবার রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মনোনয়ন চ‚ড়ান্ত করা হয়।
এর আগে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্প নিজেই নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তার রানিংমেট অর্থাৎ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ভ্যান্সকে বেছে নেওয়ার ঘোষণা দেন। সিএনএন লিখেছে, সোমবার শুরু হয়েছে রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলন। সেখানে ট্রাম্প তার রানিংমেটের নাম ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালে ভ্যান্সের লেখা বই ‘হিলবিলি এলিজি’তে ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা রয়েছে।
ভ্যান্স বলেছিলেন, তিনি ট্রাম্পের লোক নন, ট্রাম্পীয় চিন্তার মানুষ নন। তবে ধীরে ধীরে অবস্থান বদলান ভ্যান্স, হয়ে ওঠেন ট্রাম্পের বিশ্বস্ত। ২০২২ সালে ট্রাম্পের সমর্থন নিয়ে ওহাইও থেকে নির্বাচন করে সিনেটর হন। এটিই কোনো নির্বাচনে তার প্রথম জয়। ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার একচ্ছত্র অধিকার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর হলেও জাতীয় সম্মেলনে অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বিবিসি লিখেছে, স্থানীয় সময় গত সোমবার ট্রাম্পের ঘোষণার পর রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে দলটির প্রতিনিধিরা ভ্যান্সকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হিসেবে চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন। শনিবার সন্ত্রাসীর হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই গত সোমবার শুরু হয়েছে রিপাবলিকান সম্মেলন। নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনা ও চিন্তাভাবনার পর জেডি ভ্যান্সকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
তিনি দরিদ্র মানুষ ও কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। এই সম্মেলন থেকে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে চ‚ড়ান্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন ট্রাম্প। বিবিসির খবর বলছে, ভ্যান্স হলেন একজন ইয়েল-শিক্ষিত পুঁজিবাদী উদ্যোক্তা। তার লেখা সর্বাধিক বিক্রিত স্মৃতিকথা হিলবিলি এলিজি থেকে চলচ্চিত্রও হয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে অকপটে তার সমালোচনা করেন ভ্যান্স।
একবার বলেছিলেন, ট্রাম্প “আমেরিকার হিটলার” হতে পারেন। তবে হিলবিলি প্রকাশের পর ট্রাম্পের মনোযোগ আকর্ষণ করেন ভ্যান্স। ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, “বইটি আমাদের দেশের পরিশ্রমী পুরুষ ও নারীদের বিজয়ী করেছে। “ভাইস প্রেসিডেন্ট হলে জেডি আমাদের সংবিধানের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন, আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে দাঁড়াবেন এবং আমেরিকাকে আবার মহান করতে আমাকে সাহায্য করার জন্য তিনি যা করতে পারেন তার সবকিছুই করবেন।” ভ্যান্সের ছোটবেলা কেটেছে কষ্টে। মা ছিলেন মাদকাসক্ত।
শৈশবে তার বাবা তার মা ও তাকে ছেড়ে চলে যান। মূলত দাদা-দাদি তাকে লালন-পালন করে বড় করেন। সেই ভ্যান্স আজ যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। জিতলে ২০২৮ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার সহজ সুযোগও পাবেন তিনি। কারণ ট্রাম্প আর দাঁড়াতে পারবেন না।