স্টাফ রিপোর্টার : টেন্ডারের বেধে দেওয়া মেয়াদের দুই বছরের বেশী সময় অতিবাহিত হলেও সদরের রঘুখালী-ছয়না ব্রীজের কাজ আজও সম্পন্ন হয়নি। ফলে পথচারী ও ব্যবসায়ী সমাজের দুর্ভোগ চরমে। ব্রীজটি সম্পন্ন না হওয়ায় পুরান থানা-একরামপুর ও শোলাকিয়া রোডে সবসময় যানজট লেগেই থাকে যা পথচারীদের জন্য অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে দেখতে যায়। এতে করে ট্রাফিক পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীদের যানজট নিরসনে প্রচুর বেগ পেতে হয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে। যানজটের কারণে অফিস আদালত ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়ে বিড়ম্বনার শিকার হতে দেখা যায়। সময়ের কাজ সময়ে সারতে না পেরে অনেককেই হতাশার গøানি পোহাতে দেখা যায়। এদিকে তথ্যসূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের সাব-ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস আলমের চরম গাফিলতির কারণে রঘুখালী-ছয়না ব্রীজের কাজ সময়ে সম্পন্ন হয়নি। তথ্য ও সরেজমিন সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় সোয়া ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মহিনন্দ রঘুখাল-বৌলাই-ছয়না সেতু নিমার্ণ কাজের মেয়াদ প্রায় দুই বছরের অধিক সময় আগে শেষ হলেও ব্রীজটির কাজের মুখ দেখে প্রায় দেড় শতাংশ। যা স্বাভাবিকভাবে পরখ করলে রঘুখালী ও ছয়না পার্শ্বের দুই মাথায় দুটি বেলকুনির মত উঠিয়ে রড ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রেখে অরক্ষিতভাবে ফেলে রেখেছে। বহু আকাংঙ্খিত ব্রীজটির কাজের উদ্দেশ্য প্রণোদিত স্থিমিত অগ্রগতি থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। ঠিকাদার ও সাব ঠিকাদারের কাজের গাফিলতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণকেই দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ এলজিইডি। পূর্বের সেতুটি ও প্রায় নতুনেই ছিল। কিন্তু সেই সেতুটিকে সংস্কার করে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতু নিমার্ণে ব্যয় ধরা হয় সোয়া ৩ কোটি টাকা। কাজটি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এইচটিবিএল সার্চের জেবেকা ও সাব ঠিকাদার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয় কিশোরগঞ্জের মেসার্স এস আলম। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ সেতুটির নিমার্ণ কাজ শুরু হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে কাজটি ২০২২ সালের ২৩ জুন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। সেতুটির নির্মাণ কাজের দুই বছরের অধিক সময় পার হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমানে সেতুটির দুই পাশে দুইটি বর্ডার পিলার বা গার্ডার নিমার্ণের চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছে। এলাকাবাসী জানান, সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে পুরাতন সেতুটি ভেঙে সব মালামাল নিয়ে যায়। পরে দুটি গার্ডার নিমার্ণের পর অরক্ষিত অবস্থায় লাপাত্তা হয়ে যায় কোম্পানীটি, যার এখনো কোন হদিস মিলছেনা। জনদুর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসী ব্রীজটির পাশেই কাঠ ও বাঁশ দিয়ে একটি সেতু নিমার্ণ করে সাময়িক চলাচলের ব্যবস্থা করেছে। এতে করে জনদুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। এই সেতুটি মহিনন্দ, কাদিরজঙ্গল, বৌলাইসহ ভাটি অঞ্চলের নাগরিক, রোগীবাহী গাড়ী পাড়াপার হয়ে থাকে। এই ব্রীজটি না থাকায় একরামপুরে গাড়ীর জ্যাম বেঁধে শহর পর্যন্ত গড়ায়। এব্যাপারে সাইফুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী জানান, সেতুটি যথাসময়ে নির্মিত না হওয়াই প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে সবজি ব্যবসায়ী, ডিম ব্যবসায়ী ও মাছ ব্যবসায়ীদের গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। যার কারণে পণ্যবহনে ভাড়া বাবত ব্যয় বেশী হচ্ছে। এতে করে পণ্যের মূল্যও কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে সাব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্রীজটির নিমার্ণ কাজ না করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল করে প্রকল্প পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন। অনুমোদন পেলে দ্রæত নতুন দরপত্রের আহŸান করা হবে বলে তিনি জানান।