প্রতিনিধি, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) রুহুল আমিন : কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার বিসিআইসি সার ডিলার আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তেরর নির্দেশ দেওয়ার পরও তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহার টালবাহানায় তদন্তে কোন অগ্রগতি নেই।

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি তৌফিকুর রহমান এক মাস আগে সুমন কুমার সাহকে লিখিত দায়িত্ব দেন। কিন্ত অগ্যাত কারণে কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা বিসিআইসি সার ডিলার আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত কার্যক্রম ফেলে রেখেছেন।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে রুহুল আমিন উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার আবদুস সালাম সরকারি ভবন ব্যবহার করে গুদাম ও দোকান বানিয়ে রাখা এবং বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) লিখিত অভিযোগ করেন ইউএনও বরাবর।

বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স আবদুস সালাম ট্রেডার্স (আবদুস সালাম) ১৫ বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনকে গুদাম ও দোকান বানিয়ে রেখেছেন। তিনি সাব ডিলার ও কৃষকদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অন্যত্র সার বিক্রি করা,

আবদুস সালাম নিজের লাইসেন্সের বরাদ্দকৃত সার নির্ধারিত জায়গায় না এনে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া, ভুয়া কৃষকদের নাম ব্যবহার করে স্বাক্ষর-টিপসই দিয়ে রেজিস্ট্রার খাতা তৈরি করে রাখা, সাব ডিলারদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তাদের নামে বিপুল পরিমাণ সার লিখে রাখা সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় উল্লেখ রয়েছে অভিযোগে। এসব দূর্নীতির বিষয়ে ৭ অক্টোবর বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

পরবর্তীতে ৯ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি তৌফিকুর রহমান অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন কুমার সাহাকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দেন এবং সাত কর্ম দিবসের মধ্যে অভিযোগটি নিষ্পত্তির জন্য মৌখিক নির্দেশনা দেন বলে জানা যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অভিযুক্ত বিসিআইসি সার ডিলার আবদুস সালামের সাথে বিভিন্ন জায়গায় গোপনে সাক্ষাতের কথা শোনা যায়। অভিযোগকারী তদন্তের সময় নিজে উপস্থিত থেকে অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণাদি দাখিলের আবদার করলেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিযোগকারীকে সাথে রাখতে অনিহা প্রকাশ করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান রিপনের মাধ্যমে ৯ জন সাব ডিলারকে কৃষি অফিসে ডেকে এনে তাদের কাছ থেকে জোড় পূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন বলে অভিযোগ করেন সাব ডিলারগণ।

তারা বলেন, আমাদেরকে ফোনে বলেছে অফিসে আসার জন্য সারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে। কিন্তু কোনো কিছু জিজ্ঞাসা না করেই সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমরা সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে অনিহা প্রকাশ করলে তিনি ধমকাধমকি করে স্বাক্ষর নেন।

বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স আবদুস সালামের দূর্নীতির বিরুদ্ধে অডিও, ভিডিও ও কাগজে পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত থাকা সত্যেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তদন্তে তালবাহানা করায় বিষয়টি সন্ধেহভাজন বলে মনে করছেন অভিযোগকারী ও সংশ্লিষ্ট লোকজন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহার কাছে অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তৌফিকুর রহমান বলেন, বিসিআইসি সার ডিলার আবদুস সালাম সরকারি ভবন ব্যবহার ও সার নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের তদন্তটি কেন এত দেরি হচ্ছে তা নিয়ে কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহার সাথে কথা বলব।