মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন

দাফনের ৯ দিন পর ফিরে এসে জানালেন তিনি মরেননি!

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪
  • ৯৩ Time View
প্রতিকী ছবি

এফএনএস: দাফন হয়েছে। হয়েছে তিনদিনের কুলখানিও। পরিবারের সবাই শোকাহত। এর মধ্যে দাফনের ৯ দিন পর বাড়িতে জীবিত ফিরে এলেন রোকসানা আক্তার (৩০), জানালেন তিনি মরেননি! ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর গ্রামে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফিরে আসা ওই যুবতীকে একনজর দেখতে উৎসুক মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমান।

রোকসানা ওই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মে মাসের শেষ দিকে রোকসানা নিজ বাড়ি চৌদ্দগ্রামে থেকে ছোট ভাই সালাহ উদ্দিনের চট্টগ্রামের বাসায় বেড়াতে যান। পয়লা জুন ভোরে কাউকে না জানিয়ে রোকসানা বাসা থেকে বের হন। এরপর দীর্ঘদিন খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

গত ১৭ জুন ঈদুল আজহার দিন বিকালে ফেনী শহরে ভাড়া বাসায় অবস্থানরত রোকসানার খালাতো বোন হাজেরা আক্তার ও খালাতো ভাই শাহজাহান খবর পান ফেনী শহরের জিয়া মহিলা কলেজের সামনে ড্রেনের মধ্যে একজন নারীর লাশ পড়ে আছে। তারা ভাই এবায়দুল হককে খবর পাঠান।

এবায়দুল হক ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে লাশ উদ্ধারকারী উপপরিদর্শক (এসআই) প্রতুল দাসের সঙ্গে দেখা করে বোন রোকসানার ছবি দেখান। পুলিশ এবায়দুল হকের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। ওই দিন আছরের নামাজের পর গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর মধ্যমপাড়ায় সামিশকরা দীঘির দক্ষিণপাড়ে লাশ দাফন করা হয়। দাফনের ৯ দিন পর গত বুধবার বিকালে ঘটে বিপত্তি। রোকসানা বাড়িতে হাজির হলে আঁতকে ওঠেন সবাই।

রোকসানা বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম ভাইয়ের বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে ঢাকায় চলে যাই। সেখানে আমি একটি চাকরি পেয়েছি। ২৬ জুন বুধবার বাড়িতে এসে দরজা নক করলে আত্মীয়স্বজনরা আমাকে দেখে হতবাক হয়েছেন। তখন আমি জানতে পারি, আমি নাকি মারা গেছি এবং আমার লাশও দাফন করা হয়ে গেছে। আমি তো জীবিত ফিরে আসলাম।’ রোকসানার ভাই এবায়দুল হক বলেন, ‘সে আমাদের জানিয়েছে সে নাকি ঢাকায় ছিল।

সে মাঝে মাঝে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেখানে কোনো আত্মীয়ের বাসায় যায়নি। হয়তো রাস্তা বা কারও বাসায় ছিল। মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়াতে সে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। খালাতো ভাইবোনের সংবাদ পেয়ে ছবিতে কিছুটা মিল থাকার কারণে বোনের লাশ মনে করে পুলিশ থেকে লাশটি এনে দাফন করা হয়েছে। বুধবার বিকালে রোকসানা জীবিত বাড়ি ফিরলে ফেনী মডেল থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

’ প্রতিবেশী আলী আজ্জম বলেন, ‘আমাদের রোকসানা অসুস্থ। তাকে আমরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। সে সুস্থ হয়নি। অসুস্থতার কারণে মাঝে মাঝে এমন করে বসে।’ স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু মুসা বলেন, ‘লোক মারফতে বিষয়টি শুনেছি। তবে কার লাশ দাফন করা হয়েছে সেটিই এখন দেখার বিষয়।’

ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) প্রতুল দাস গত শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘উদ্ধার করা লাশটি বিকৃত ছিল। এবায়দুল হক ও তার স্বজনেরা উদ্ধার লাশটি রোকসানার বলে শনাক্ত করে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু তাদের বোন সশরীরে বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে, তাই আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো।’

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty