করিমগঞ্জ প্রতিনিধি, এম এ জলিল :
করিমগঞ্জ উপজেলায় নিজ জমিতে স্থাপনা নিমার্ণ কাজে বাধার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু আনিস ফকির। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলার রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিস ফকির সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, উপজেলার গুজাদিয়া মৌজায় অবস্থিত তার ০১ একর ১৬ শতাংশ কান্দা জমি জবরদখলের পাঁয়তারা চলছে। তিনি জানান, বি আর এস খতিয়ান নং ৪৭৫১/২ এবং বি আর এস ২২৫৩৪ দাগভুক্ত জমিটি প্রায় ৩৮ বছর আগে তিনি খরিদ স‚ত্রে মালিক হন। জমির মালিকানার স্বপক্ষে তার নামে দুটি সাফ কাওলা দলিল (নম্বর ৪৯৬৮ এবং ৪৪৯১) রয়েছে।
এছাড়াও, আনিস ফকিরের নামে জমির খারিজ ও পৃথক পর্চা হোল্ডিং নম্বর রয়েছে এবং তিনি নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। তিনি আরও দাবি করেন যে, জমি সংক্রান্ত তার সব ধরনের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্তে¡ও স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল জমিটি দখলের জন্য নানা পন্থায় ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিআরএস জরিপের সময় উক্ত জমির রেকর্ড ভুল হয়েছিল, যা পরবর্তীতে বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আদালতের নির্দেশে আমার নামে সংশোধন করা হয় এবং নামজারি সেভাবেই হালনাগাদ করা হয়। পরবর্তীতে জমিটি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ঋণও উত্তোলন করি। আমার পরিবারের সুনাম রয়েছে এবং আমার পাঁচ ছেলের মধ্যে দুইজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা, বাকিরাও বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। বর্তমানে আমি পরিবারসহ উক্ত জমি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দ‚রে বসবাস করছি।
প‚র্বে চাকরিরত অবস্থায় বিভিন্ন সেনানিবাসে থাকার কারণে গ্রামের বাড়িতে স্থায়ীভাবে থাকার বা কিছু করার সুযোগ হয়নি। গ্রামে আমার বাড়ি করার মতো জমিও নেই। স¤প্রতি অবসরে এসে রেজিস্ট্রার্ড আমিন দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে উক্ত জমিতে বাড়ি ও স্থায়ী স্থাপনা করার উদ্যোগ নেই। তবে কাজ শুরু করার ৪-৫ দিনের মধ্যেই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল প‚র্ব শত্রæতার জের ধরে এবং স্থানীয় ভ‚মি সহকারী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসানের যোগসাজশে আমাকে বাধা প্রদান করে। কামরুল হাসান তার জমির চার শতাংশ অবৈধভাবে ভোগ করেছে বলে অভিযোগও করেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন- জিল্লুর রহমান, আলী আশরাফ, বাদল ফকির, বুলবুল ফকির, গোলাপ ফকির, ছামির উদ্দিন, ফকির চাঁন, মিজানুর রহমান, আঞ্জু মিয়া, মহর উদ্দিন, আলম ফকিরসহ আরও কয়েকজন এসে আমার কাজে বাধা দেয় এবং তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তারা চাঁদা না দিলে কাজ করতে দেবে না বলে জানায় এবং আমার জমি থেকে গাছপালা কেটে নেওয়া শুরু করে।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি তাদের বিরুদ্ধে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য মামলা (নং ১৬৩৩/২০২৪) দায়ের করি। কিন্তু তারা গ্রামের সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে এবং তাদের স্ত্রী-পরিজন ও ভাড়াটে লোকজন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন, জুতা মিছিল, ঝাড়ু মিছিলসহ অশালীন স্লোগান দেয়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাংবাদিকদের এনে এসব প্রচার করে যা আমার জন্য অত্যন্ত মানহানিকর।
এছাড়াও, অন্যায়ের প্রতিবাদকারী সাতজনকে আসামি করে মনগড়া কাহিনী সাজিয়ে গত ২৪/১২/২০২৪ তারিখে ৩২৬ ধারা সহ বিভিন্ন ফৌজদারি ধারায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এ অবস্থায় আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি।