প্রতিনিধি তাড়াইল : দেশের প্রথম বেসরকারি জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ৪০ বছরে পা দিয়েছে গতকাল (২৩ এপ্রিল)। ১৯৮৫ সালের এই দিনে এম. হায়দার চৌধুরীসহ কয়েকজন স্বপ্নবাজ ব্যবসায়ীর হাতে ‘নিশ্চিত ভবিষ্যতের সুহৃদ সাথী’ ¯েøাগান ধারণ করে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে অবিচল থেকে দৃপ্ত চেতনায় ভর করে চার দশক পার করলো প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বেলা ১১টায় কিশোরগঞ্জ মনিটরিং এরিয়া অফিসে আনন্দঘন পরিবেশে কেক কেটে দেশের প্রথম বেসরকারি জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ৪০ বছরের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আলোচনা সভায় পর পর তিনবার স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট, কিশোরগঞ্জ মনিটরিং এরিয়ার এরিয়া প্রধান একে এম আসাদুল্লাহ খান উপস্থিত বীমা গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দীর্ঘ এই পথ চলায় কোম্পানির সাফল্যের মুকুটে এক এক করে যুক্ত হয়েছে অগণিত পালক। শুধু সাফল্যই নয়, গত চারদশক ধরে জীবন বীমা কোম্পানিটি বীমা খাতের ‘রাহবারের’ ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে তাই শীর্ষ স্থানটি পোক্ত করে নিয়েছে কোম্পানিটি। তিনি আরও বলেন, ১৯৮৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত কোম্পানির মোট প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ১৭ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। লাইফ ফান্ড দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত কোম্পানিটি বিনিয়োগ করেছে ৫ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। কোম্পানির মোট সম্পদ ৬ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। শুরু থেকে এ পর্যন্ত কোম্পানিটি ৬৭ লক্ষাধিক বীমা পলিসি বিক্রি করেছে। বীমা দাবি পরিশোধ করেছে সর্বমোট ১০ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। তিনি বলেন, ব্যবসার সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে কোম্পানিটি এক হাজার ৮৬০ কোটি ২ লাখ টাকা সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ করেছে। এর আগের বছর সর্বমোট প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে এক হাজার ৬১৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে ন্যাশনাল লাইফের প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ, লাইফ ফান্ড বেড়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং বিনিয়োগ বেড়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। চার দশকের পথচলায় কোম্পানিটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাফল্যের নানা পালক। পেয়েছে নানা পুরস্কার। এরমধ্যে সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালে ন্যাশনাল লাইফ জাতীয় বীমা দিবস সম্মাননা স্মারক-২০২৩ পেয়েছে। সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্টস-সাফা গোল্ড অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ পেয়েছে কোম্পানিটি। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের শীর্ষ করদাতার সম্মাননাও অর্জন করে কোম্পানিটি। এফবিসিসিআই বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৩, আইসিএমএবি বেস্ট করপোরেট অ্যাওয়ার্ড গোল্ড-২০২২ এবং আইসিএসবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড গোল্ড-২০২২ অর্জন করে ন্যাশনাল লাইফ। কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. কাজিম উদ্দিনের দৃঢ় নেতৃত্বে ন্যাশনাল লাইফের ব্যবসা যেমন বাড়ছে তেমনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করছে। তিনি আরও বলেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলছে, গ্রাহকসেবা, ইতিবাচক ব্যবসা, বীমা দাবি পরিশোধ, বিনিয়োগ, লাইফ ফান্ড ও কর্পোরেট কমপ্ল্যায়েন্স যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে শীর্ষতম স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল লাইফ। শুধু তাই নয়, সর্বোত্তম গ্রাহক সেবা, দ্রæত বীমা দাবি পরিশোধ ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর টিকে আছে কোম্পানিটি। সবশেষে তিনি বলেন, ন্যাশনাল লাইফের প্রতিষ্ঠা এম. হায়দার চৌধুরী ১৯৮৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২৪ বছর একটানা কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি তিনি মারা গেছেন। বর্তমানে কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎযাপন করেছে কিশোরগঞ্জ মনিটরিং এরিয়ার তাড়াইল সাংগঠনিক অফিস, প্রস্তাবিত পাকুন্দিয়া জোন, কটিয়াদি জোন, করিমগঞ্জ এজেন্সি অফিস, পাকুন্দিয়া, বাজিতপুর, অষ্টগ্রাম ও নান্দাইল। ৪০ বছর বর্ষপূর্তি উদযাপনে ব্রাঞ্চ ম্যনেজার, অন্যান্য কর্মকর্তা, বীমা গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।