প্রতিনিধি পাকুন্দিয়া : পাকুন্দিয়ার চাঞ্চল্যকর শরীফ হত্যা মামলার আরেক এজহারভূক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। গ্রেফতার শ্যামল (২০) পাকুন্দিয়া উপজেলার পোড়াবাড়িয়া এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে। তিনি হত্যা মামলার ৮ নম্বর এজহারভূক্ত আসামি। এ নিয়ে মামলার মোট ৫ আসামিকে গ্রেফতার করা হলো। গত রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানান র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভিকটিম মো. শরীফ খান (২৩) কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানাধীন পোড়াবাড়িয়া সাকিনস্থ পোড়াবাড়িয়া স্কুল মাঠ সংলগ্ন মেলাবাজার নামক স্থানে বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যান। অনুমানিক রাত ১টার দিকে হঠাৎ অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এজাহারনামীয় ২ নম্বর আসামি সজীব হাসান ভিকটিম শরীফ খানকে স্টেজ থেকে বুক বরাবর লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। ভিকটিম শরীফ খান তার সঙ্গীও লোকজনসহ স্টেজে উঠে প্রতিবাদ করলে সজীবের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আয়োজক কমিটি নাচ গান বন্ধ করে দেয় এবং ২নম্বর আসামি মাইকের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বলেন যে, কোষাকান্দার শালাদের ধর কেউ যাতে জান নিয়ে বেঁচে যেতে না পারে। এই হুকুম পাওয়া মাত্র এজাহারনামীয় ১নম্বর আসামির হুকুমে ২নম্বর আসামি সজীব, গ্রেফতার আসামি শ্যামল এবং অন্যান্য আসামিগণ ভিকটিম শরীফ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের উপর আক্রমণ চালায়। একপর্যায়ে আসামিগণ ধারালো ছুরি ও ড্যাগার দিয়ে ভিকটিম শরীফ খানকে এলোপাথারিভাবে বুক, পিঠ সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করলে শরীফ খান গুরুতর জখম হন। পরে অনুষ্ঠান স্থলের লোকজন গুরুতর জখম শরীফ খানকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিম শরীফ খান একই তারিখ রাত অনুমান আড়াইটার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মো. আবুল হোসেন বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানায় ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকেই আসামিগণ গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যান।
এর আগে শনিবার, ২৭ এপ্রিল দুপুরে অভিযান চালিয়ে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ মামলার এজহারভূক্ত চার আসামিকে উপজেলার পোড়াবাড়িয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার চারজনের মধ্যে মো. রাজন মিয়া (৩০) উপজেলার পোড়াবড়িয়া এলাকার রিপন চৌকিদারের ছেলে সোহেল মিয়া (২৬), একই গ্রামের মৃত সাইদুল হকের ছেলে মাহমুদুল হাসান রাজন (২৭), একই গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে দেলোয়ার হোসেন শাহিন (২০)। গ্রেফতার শ্যামলকে পাকুন্দিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে ওসি আসাদুজ্জামান টিটু পিপিএম জানান।