প্রতিনিধি পাকুন্দিয়া, আবু হানিফ : পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের চরটেংগাবর গ্রামের স্বামী পরিত্যক্ত নারী বিথী বেগম ভিক্ষা করে দুই মেয়ের ভরণ-পোষণ করতেন। ভিক্ষা করার সুবাদে একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী চরটেংগাবর গ্রামের ফজর আলীর সঙ্গে পরিচয় হয়।
এক পর্যায়ে ফজর আলী দুই মেয়ে সন্তানসহ বিথী বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে বিথীকে দিয়ে নিয়মিত ভিক্ষা করাত তার স্বামী ফজর আলী।
এ সময় কন্যা রিমা ও রুমাকে বাড়িতে শিকলবন্দী করে রাখত তার সৎ বাবা ফজর আলী। নিষ্ঠুরতায় অমানবিক জীবন কাটছিল রিমা-রুমার। বাহাদিয়া গ্রামের আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি ওই এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গেলে বিষয়টি নজরে পড়ে তার।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ওই দুই শিশুকে শিকলমুক্ত করার চেষ্টা করেন তিনি। সে চেষ্টা করে কোন লাভ হয়নি। পরে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মো. মামুন সরকারকে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পাঠান। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিশুদের শিকলমুক্ত করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা এরশাদ মিয়া জানান, ফজর আলী আগে একাধিক বিয়ে করেছেন। সর্বশেষ ভিক্ষুক ওই নারীকে বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করিয়ে আসছেন। তাদের ঠিকমতো দেখভাল করতেন না। অবহেলা আর নিষ্ঠুরতার বলি ওই দুই শিশু। বিষয়টি ইউএনও’কে অবগত করা হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিকলমুক্ত হয় তারা।
পাকুন্দিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাচ্চাগুলোকে শিকলমুক্ত করা হয়েছে। তাদের আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও সমাজ সেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে ভিক্ষুক পুনর্বাসনের আওতায় ওই নারীকে স্বাবলম্বী করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ফজর আলীকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে সন্তানদের সঙ্গে এমন আচরণ করবে না মর্মে মুচলেকা নেয়া হয়েছে।