স্টাফ রিপোর্টার : পাকুন্দিয়ায় মুক্তার উদ্দিন (৫৫) নামে এক বিদ্যুৎ গ্রাহককে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে পল্লী বিদ্যুতের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে। বিদ্যুতের সার্ভিস লাইন মেরামত নিয়ে তর্কের জেরে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে পাকুন্দিয়া পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের নিচ তলায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অফিসে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান কর্মচারীরা। মুক্তার উদ্দিন পাকুন্দিয়া পৌরসদরের হাপানিয়া গ্রামের মির্জালীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার মুক্তার উদ্দিনের বাড়ির বিদ্যুতের সার্ভিস লাইনটি পুড়ে যায়। এটি মেরামতের জন্য ওইদিনই মুক্তার উদ্দিন বিদ্যুৎ অফিসে যান। লাইনটি মেরামতের আশ^াস দিলে তিনি বাড়ি ফিরে যান। দুইদিন অপেক্ষার পরও বিদ্যুৎতের লোকজন তার বাড়িতে না যাওয়ায় তিনি গত মঙ্গলবার আবার বিদ্যুৎ অফিসে যান। ওইদিনও আশ^াস পেয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যান।
আবারও তারা তার বাড়িতে না যাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল বিকেলে মেয়ে সুমা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে যান। এনিয়ে বিদ্যুৎ কর্মচারীদের সঙ্গে তার তর্ক বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে একজন কর্মচারী মুক্তার উদ্দিনের পেটে লাথি ও কিল-ঘুষি মারে। অপর কর্মচারী মুক্তার উদ্দিনের গলায় ধরে উপরে উঠিয়ে মাটিতে আচাড় মেরে অফিসের সামনে ফেলে দেয়। এতে তিনি অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে থাকেন। এসময় বিদ্যুত অফিসের লোকজন গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। তাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে শতশত পথচারী ঘটনাস্থলে জড়ো হন। এর ঘন্টা খানেক পর খবর পেয়ে পাকুন্দিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।
মেয়ে সুমা আক্তার বলেন, গত রবিবার আমাদের বাড়ির বিদ্যুৎ লাইনটি পুড়ে যায়। লাইনটি মেরামতের জন্য বাবা পরপর তিন দিন বিদ্যুৎ অফিসে আসেন। কিন্তু লাইনটি মেরামতের জন্য বিদ্যুৎ অফিসের কোনো লোক আমাদের বাড়িতে যাননি। তাই গতকাল বিকেলে বাবা আমাকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে আসেন। এনিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীদের সঙ্গে কিছু তর্ক-বিতর্ক হয়।
এর জেরে আমার বাবাকে দুই কর্মচারী বেধড়ক মারধর করেছে। একপর্যায়ে বাবার গলায় ধরে উপরে উঠিয়ে মাটিতে আচার মারে। এতে আমার বাবা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে থাকেন। এসময় আমি ডাক-চিৎকার করলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন অফিসে তালা দিয়ে পালিয়ে যান। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। কর্মচারীদের নাম জানতে চাইলে তিনি তাদের কারো নাম বলতে পারেননি। তবে দেখলে তাদেরকে চিনতে পারবেন বলে জানান।
বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন পালিয়ে থাকায় এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাকুন্দিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম শহীদুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ গ্রীডে রয়েছি। এ ঘটনার ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আসাদুজ্জামান টিটু (পিপিএম) বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমি তার মেয়েকে বলেছি একটি লিখিত অভিযোগ দিতে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।