পাকুন্দিয়া প্রতিনিধি, মুহিব্বুল্লাহ বচ্চন : পাকুন্দিয়ায় ভোজ্য তেলের সর্বাধিক ব্যবহার্য সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দোকানে দোকানে ঘুরেও তেল কিনতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা। শর্তসাপেক্ষে অন্যান্য পণ্যের সাথে তেল বিক্রি করছেন কোন কোন ব্যবসায়ী। সরকার নির্ধারিত ম‚ল্য থেকেও বাড়তি দাম দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেল। গত দুই মাস যাবত সয়াবিন তেলের এই সংকট থাকায় জনসাধারণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দোকানিরা বলছেন, বড় ব্যবসায়ীরদের সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে এই অবস্থা বিরাজ করছে।
ডিলাররা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় তেলের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভোক্তারা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছে, গত নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাজারে ভোজ্য তেলের অস্থিরতা শুরু হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আগাম খবর ছড়িয়ে পড়ায় কোম্পানি থেকে ডিলারদের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়। এতেই শুরু হয় ভোগান্তি। হঠাৎ বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজার থেকে উধাও হতে শুরু করে। খোলা সয়াবিনও বিক্রি শুরু হয় চড়া দামে। বাজারে সংকট দেখা দেয় ১ লিটার ও ২ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের। ডিসেম্বরের শুরুতেই বাজার নিয়ন্ত্রণে সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় সরকার। তবুও সরবরাহের সংকট কাটেনি। সরকার ইতোমধ্যে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত তেলের আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি, ডিউটি ও অগ্রিম আয়কর শতভাগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তারপরও বাজারে তেলের সংকট থাকায় সাধারণ ভোক্তাগণ অস্বস্তি প্রকাশ করছেন।
বাজারে তেল কিনতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান জানান, ‘বাজারে তেল কিনতে এসে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে আগের তুলনায় বেশি দামে তেল কিনতে হয়েছে, তাছাড়া মনে হচ্ছে বাজারে সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট রয়েছে।’
তীর কোম্পানির ডিলার মো. আসাদুজ্জামান এবং পুষ্টি কোম্পানির ডিলার মো. নাজমুল ইসলাম জানান, গত ২ মাস যাবত বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী কোম্পানি থেকে তেল সরবরাহ পাচ্ছি না। তাছাড়া ডিলারদের কোম্পানি থেকে তেল আনতে গেলে সাথে কোম্পানির আটা, ময়দা, পানি, সুজি, চা পাতা ইত্যাদি শর্ত হিসেবে কিনতে হচ্ছে।
এ ব্যপারে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন জানান, সরকার তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। উপজেলা প্রশাসন তেল নিয়ে কারসাজি রোধে কাজ করছে আর এজন্য ব্যবসায়ীদের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। সরকার নির্ধারিত ম‚ল্য থেকে অতিরিক্ত দামে কোথাও তেল বিক্রি হলে প্রশাসনকে জানানোর অনুরোধ করা হচ্ছে। আমাদের মনিটরিং টিম ইতোমধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শুরু করেছে।