বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোমান :
সুবীর বসাক এর এই দিনের ছড়া ‘গর্জে ওঠার পালা’ পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: ১০ চিকিৎসকের বদলে আছেন মাত্র দু’জন কটিয়াদী বাজারে মধ্যরাতে আগুন: অর্ধকোটি টাকার ফার্নিচার পুড়ে ছাই আউয়ালসহ সকল সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি আওয়ামী লীগের অপতৎপরতার প্রতিবাদেপাকুন্দিয়ায় বিএনপি’র বিক্ষোভ ইজতেমা ময়দানে হত্যার প্রতিবাদেঅষ্টগ্রামে গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ আশুতিয়াপাড়া শিক্ষা নিকেতনেরবার্ষিক সমাবেশ ও পুরষ্কার বিতরণ কিশোরগঞ্জে ট্রাই-ইউনিটি অ্যালায়েন্সের আয়োজনে বৃত্তি পরীক্ষা হোসেন স্পেশালাইজ্ড হসপিটালের ফ্রি ব্লাডগ্রুপিং ক্যাম্পেইন সুবীর বসাক এর এই দিনের ছড়া ‘মব ট্রায়াল’

পাকুন্দিয়ার পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগে পর্যটকদের ভিড়

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৮ Time View

আবু হানিফ : মহান সৃষ্টিকর্তা তার সব সৃষ্টি উত্তম রূপে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু তার মধ্যে অন্যতম সুন্দর হল ফুল। যুগে যুগে, কালে কালে মানুষ ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে। সৌন্দর্যের প্রতীক ফুল। কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের হোসেন্দী নামাপাড়া গ্রামে নবাগিয়া বিল প্রতি বর্ষা শেষে শরতকে আলিঙ্গন করে হাজারো গোলাপি পদ্মফুলের ঢালি সাজায়। আর সেই অপরূপ-নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখতে এ পদ্মবিলে ভিড় করেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন বয়সের কৌত‚হলী নারী-পুরুষ। এ যেনো পাকুন্দিয়া ঐতিহ্যবাহী হাওর পর্যটনের আরও এক নতুন আকর্ষণ ও চমক।

বর্ষা আর শরতের সন্ধিক্ষণ মানেই গ্রাম বাংলার বিল-ঝিলে পদ্ম ফুল ফোটার অপার সৌন্দর্যের হাতছানি। কালের রুদ্ররোষে হারিয়ে যেতে বসেছে পদ্মবিল। আর তাই প্রকৃতির অপরূপ অলঙ্কার পাকুন্দিয়া পদ্মবিল দেখতে প্রকৃতিপ্রেমী নারী-পুরুষের ঢল নেমেছে সেখানে। প্রকৃতিপ্রেমীদের আনাগোনায় পদ্মবিল হয়ে ওঠেছে পর্যটনের বাড়তি আকর্ষণ।

বন্ধু স্বজনদের নিয়ে ডিঙি নৌকায় উঠে দিগন্ত বিস্তৃত পদ্মবিলে পদ্ম ফুলের আভায় নিজেদের রাঙিয়ে নিতে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ যেনো ভিন্ন। আনমনে কখনও গুনগুন করে গান গাওয়া কিংবা কবিতা আবৃত্তি করে ক্ষণিকের জন্য নিজেদের আড়াল করে দেয়া হয় মনোমুগ্ধকর পরিবেশের চাদরে।

চোখ জুড়ানো সবুজ দিগন্ত বিল। সেখানে গাঢ় সবুজ পাতার মাঝে হালকা গোলাপি রঙের পদ্মফুলের উঁকি মারে আর বাতাসে সাথে ধুলকায়। সবুজ পাতা আর গোলাপি পদ্মের মিলন-মেলায় মনের আনন্দে নির্ভয়ে বিচরণ করছে পানকৌড়ি আর ডাহুক পাখি। ফুটন্ত পদ্মের মাথায় খেলা করছে প্রজাপতি আর ভ্রমরার দল। হালকা গোলাপি রঙের পদ্মফুলের সৌরভ ও সৌন্দর্য যেমন মানুষের মনকে আকর্ষিত করে ঠিক তেমনি খাদ্য ও ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ এ ফুল অনেক জনপ্রিয়। পদ্মফুল অনেকের কাছে আবার বিশুদ্ধতা ও পবিত্রতার প্রতীক।

বর্ষা ও শরৎকালে এ বিলের বুক-জুড়ে দেখা দেয় পদ্মফুলের সমারোহ। বর্ষাকালে এ বিলে প্রাকৃতিকভাবে পদ্মফুল জন্মে। বর্ষা মৌসুমে এ বিলের চারদিকে শুধু পদ্ম আর পদ্ম। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গোলাপি রঙের পদ্ম। সঙ্গে রয়েছে সাদা পদ্ম। চোখ যত দ‚র যায় শুধু পদ্ম গত সোমবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিলের চারপাশে সবুজের সমাহার আর ফুটে থাকা অজস্র পদ্মফুল শোভা ছড়াচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের মাঝে। প্রতিদিন বিলে এসে ভিড় করছেন দ‚র-দ‚রান্ত থেকে আসা প্রকৃতিপ্রেমীরা। ডিঙি নৌকায় ভেসে জলের ছন্দের তালে তালে পদ্মফুল স্পর্শ করছেন। মন ভোলানো দৃশ্য দেখলে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। নয়নাভিরাম দৃশ্য স্মৃতিরপাতায় ধরে রাখতে তুলছেন ছবি।

পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দর্শক নাছির উদ্দীন বলেন, এ পদ্মবিলের পদ্মফুল এবং পদ্মপাতা দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। বিলের অপরূপ দৃশ্যটি মানুষের মনে দাগ কাটার মতো। পদ্মফুল ও তার পাতা স্পর্শ করলে মনে হয় যেন সৌন্দর্যের লীলাভ‚মিতে প্রবেশ করেছি। বিলের পদ্মফুলগুলো আশপাশের পরিবেশটাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সাদা-লাল রঙের পদ্মফুলের মাঝে সবুজ রঙের পদ্মপাতাগুলো পরিবেশটাকে অন্য রকম করে তুলেছে।
পরিবার নিয়ে বিলে ঘুরতে এসেছে ছাবিনা বলেন, পদ্মফুলের সৌন্দর্য দেখতে এখানে এসেছি। চোখ যেদিকে যায় সেদিকেই শুধু পদ্ম আর পদ্ম। সত্যিই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

স্থানীয়রা জানান, এই বিলটিতে বর্ষাকালে অসংখ্য পদ্মফুল ফোটে। পদ্মফুল দেখার জন্য অনেক মানুষের সমাগম হয়। নৌকা দিয়ে বিলটি ঘুরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। অনেক দর্শনার্থী মনের আনন্দে কিংবা ছবি তোলার জন্য ফুল ছিঁড়ছেন। অনেকে আবার ফুল ছিঁড়ে বাসায় নিয়ে প্রিয়জনকে উপহার দিচ্ছেন। এতে বিলটিতে পদ্মফুলের সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে এবং বিলের সৌন্দর্যও বিনষ্ট হতে চলেছে ।

সাধারণত পুরোনো গাছের কন্দ ও বীজের সাহায্যে পদ্মের বংশবিস্তার হয়ে থাকে। এভাবে যদি ফুল ছেঁড়া অব্যাহত থাকে, তাহলে পদ্মের বংশবিস্তার কমে যাবে এবং বিলটির অপরূপ সৌন্দর্য হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় বিলটি সংরক্ষণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও স্থানীয়রা জানান।
পদ্মবিলে ঘুরতে আসা পাকুন্দিয়া মহিলা কলেজের অফিস সহকারী লুৎফুর রহমান(দিগন্ত) জানান, যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও সুন্দর জায়গাটা। আসলে এর সৌন্দর্য বলে বোঝানো সম্ভব না। অন্য রকম এক ভালো লাগা কাজ করে। মন ভালো হতে বাধ্য আপনার।

বিলপাড়ে রয়েছে কয়েকটি ডিঙি নৌকা। এতে চড়ে বিলের মাঝে যাওয়া যায়। ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় আধাঘণ্টা ঘুরে বেড়ানো যায়। তবে নৌকায় দু-তিনজনের বেশি উঠতে পারেন না। স্থানীয় অনেকেই এ বিলে নৌকা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করছেন।

পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাদিউল ইসলাম হাদি বলেন, নবাগিয়া পদ্ম-বিলটি পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী একটি ঐতিহ্যবাহী বিল। বিলটিতে আগে যাওয়ার কোর রাস্তা ছিলনা, বর্তমানে বিলটিতে যাওয়ার জন্য একটি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। প্রশাসনের কাছে রাস্তাটি পাকাকরণ ও সিংরইল বিলটিকে পর্যটন স্পট হিসেবে ঘোষণার জোর দাবি জানান।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন জানান, পদ্মবিলে শত শত পদ্মফুল ফুটতে দেখা যাচ্ছে। পদ্মফুল সংরক্ষণের জন্য কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায় কি না সেটা বিবেচনায় রয়েছে।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty