প্রতিনিধি, পাকুন্দিয়া : পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।গত রবিবার (১২ মে) বিকাল ৪টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কবির জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. শারফুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কবির জীবন ও সাহিত্যকর্মের ওপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানিয়া আক্তার, পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. কফিল উদ্দীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক ভূঁইয়া, চরকাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক কল্যাণ ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম।
আরও উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা জামান পুনম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দত্ত, উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া আরও বিভিন্ন কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলেন।
পাকুন্দিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ারা বেগম কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন। কবিকে নিবেদিত স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশ নেন সালুয়াদী স্বপ্ন পাঠাগার ও সংগ্রহশালার সভাপতি কবি ও ছড়াকার গোলাপ আমিন। সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পী বৃষ্টি আদিত্য, সাদিয়া আফরিন দীপা, অভিজিৎ নন্দী, ধ্রæব দেবনাথ প্রমুখ। উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ একক ও দলীয় সংগীত ও নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁর বক্তব্যে বলেন, বহুবিধ প্রতিভার অধিকারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে বাংলা ভাষার সাহিত্য-সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি করেছেন। অনেক উচ্চ আসনে পৌঁছে দিয়েছেন। বিশ্বখ্যাত কবিদের সাথে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যার ফলে সমসাময়িক কবি ডবিøউ বি ইয়েটসের সাথেও তাঁর যোগাযোগের কারণে ‘১গীতাঞ্জলি’ ইংরেজিতে অনূদিত হয়।
তিনি আরও বলেন- রবি ঠাকুর তাঁর নিবিষ্ট ও নিরন্তর সাহিত্য সাধনা ও চিন্তা-চেতনার মধ্য দিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক ও ভ্রাতৃত্ববোধের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চেয়েছেন। আর এ সাধনায় তিনি সারাটা জীবন সাহিত্য চর্চা করে কাটিয়ে দিয়ে বাংলা সাহিত্যকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করেছেন। যা তাঁর মহামূল্যবান সৃষ্টিকর্ম হিসেবে আজও রয়ে গেছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লন্ডনের সাসেক্সে ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন, আমিও একই ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সর্বসময় প্রাসঙ্গিক বলে তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে বেশি বেশি করে রবীন্দ্র-চর্চার আহ্বান জানান ও এর কোনো বিকল্প নেই বলে গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।