স্টাফ রিপোর্টার, পাকুন্দিয়া আছাদুজ্জামান খন্দকার :
মাত্র দুইজন জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চলছে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০টি পদের ৮টিই খালি রয়েছে। এতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ অঞ্চলসহ আশপাশ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অনুমোদিত ১০টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালে মেডিসিন, সার্জারি, অর্থপেডিক্স, কার্ডিওলোজি, চর্ম ও যৌন, নাক-কান ও গলা, চক্ষু ও শিশু বিভাগে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ খালি আছে।
শুধু গাইনি এবং অ্যানেসথেসিয়া বিভাগে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন দুইজন চিকিৎসক। এছাড়া দুইজন জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে প্রেষনে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফারজানা সুলতানা বর্না গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এবং শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আফরোজা সুলতানা গত ২২ এপ্রিল থেকে গাজীপুরের শহিদ তাজ উদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেষনে কর্মরত আছেন।
জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি রয়েছে মেডিকেল অফিসারেরও সংকট। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১০ জন। তাদের মধ্যে ডাক্তার মাহফুজা আক্তার গত ১৩ আগস্ট থেকে প্রেষনে পাশ^বর্তী হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন।
অপরদিকে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ফারুক প্রধান উচ্চ শিক্ষার জন্য আগামী ১ জানুয়ারী থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটিতে যাবেন। এতে কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে অনেকেই চলে যাচ্ছেন জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত রোগীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা আকবর নামে একজন রোগী বলেন, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। ফলে আমাদের জেলা শহরের বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। এতে আমাদের খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. নাজিবুল হক বলেন, ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ৬০ থেকে ৭০ জন। আবার বহির্বিভাগেও প্রতিদিন গড়ে ৫শ থেকে ৬শ রোগী উপস্থিত থাকে। ফলে চিকিৎসক সংকট থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগীদের কাক্সিক্ষত সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর-এ-আলম বলেন, ডাক্তারদের সংযুক্তি বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তাছাড়া শূন্য পদ পূরনের জন্যও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোন কাজ হয়নি।