প্রতিনিধি, পাকুন্দিয়া, মুহিব্বুল্লাহ বচ্চন : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সব ধরনের ভ্যাকসিনের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় একমাস ধরে ভ্যাকসিনের এ সংকট থাকায় হাজারো শিশু-কিশোরী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। আপর দিকে উপজেলার চার লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে ইতোমধ্যে চিকিৎসক ও ঔষদের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের টিকা দেওয়ার কক্ষটি তালাবদ্ধ রয়েছে। টিকা দিতে আসা লোকজন প্রয়োজনীয় টিকা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুরাও টিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কবে নাগাদ পাওয়া যাবে সে নিশ্চয়তাও কেউ দিতে পারছেন না।
বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা লোকজনদের প্রচন্ড ভিড়। চিকিৎসক সংকট থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে ডাক্তার দেখাচ্ছেন অনেকেই। এনসিডি কর্নারের কাউন্টারেও রয়েছে ঔষদের সংকট, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপ‚র্ণ ঔষদের সরবারহ বন্ধ রয়েছে।
হাসপাতাল স‚ত্রে জানা যায়, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রতি মাসে অন্তত ৬০০ থেকে ৭০০ শিশুকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। শিশুর জন্মের পরপরই ভিসিজি টিকা’র ১৪ দিন পর ওপিপি টিকা, ৬ সপ্তাহ পর থেকে ১ মাস অন্তর অন্তর পেনটা, পিসিভি, ওপিপি ও আইপিভি টিকা দেওয়া হয়ে থাকে।
শিশুর বয়স ৯ মাস প‚র্ণ হলে এম আর টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সের কিশোরী মেয়েদেরকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু প্রায় ১ মাস যাবত এই সকল ধরনের টিকার সংকট থাকায় সময়মতো প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের মহিলাদের টিডি টিকা দেওয়া এবং করোনার টিকা প্রদান বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, হাসপাতালটিতে রয়েছে চিকিৎসক ও ঔষধ সংকট, ৩১ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে ১১ জন চিকিৎসক কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও ডায়াবেটিক, এজমা, প্রেসারসহ গুরুত্বপ‚র্ণ ঔষদের দীর্ঘদিন যাবত রয়েছে সংকট।
উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ফেরদৌস আহমেদ জানান, বাচ্চার বয়স ৬ মাস, দুটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। বর্তনানে সরবরাহ না থাকায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ন‚র-এ-আলম খান জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে ভ্যাকসিন ক্রয় করে সারা দেশে চাহিদা মত সরবরাহ করা হয়। অধিদপ্তরের অপারেশনাল প্ল্যান এখনো অনুমোদন না হওয়ায় এই অর্থবছরে ভ্যাকসিন ক্রয় হতে দেরি হচ্ছে। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে সংকট হয়েছে। শীঘ্রই সমস্যা সমাধানে অধিদপ্তর কাজ করছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম প্রতিনিধিকে জানান, জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভ্যাকসিন আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সারা দেশেই ভ্যাকসিনের সংকট রয়েছে, তবে খুব দ্রুতই ভ্যাকসিন সরবরাহ পাব বলে আশা করছি। এছাড়া চিকিৎসক ও ঔষদের সংকট নিরসন খুব শীঘ্রই জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান।