রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন

পারিবারিক বিরোধের জেরে নিরীহ কৃষককেচুরির মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২ Time View

স্টাফ রিপোর্টার, মো. আবদুল কাদির :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে পারিবারিক বিরোধের জেরে নিরীহ কৃষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামালা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বোর জমিতে ডিপটিউবওয়েল দিয়ে সেচের পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে হোসেনপুর উপজেলার দক্ষিণ চরপুমদী গ্রামের কৃষক ফরিদ মিয়ার ছেলে জুনাক (২৪)-এর বিরুদ্ধে এ মামালা দায়ের করেন জাহাঙ্গীর আলম। হোসেনপুর থানার মামলা নং ০১ তারিখ ০১/১২/২০২৪ ইং ধারা ৩৮০/৪৫৭ দঃ বিঃ।

মামলার সূত্রে জানা যায়, বাদী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার উত্তর চরপুমদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। চাকুরির সুবাদে ফাহমিদা প্রায়ই তার বাবা ইব্রাহিম মাষ্টারের বাড়িতে থাকেন। গত ২৭ নভেম্বর রাতে ইব্রাহিম মাষ্টারের বসত ঘরে চুরি হয়। বসত ঘরের দরজা খুলে তার মেয়ের স্বর্ণালংকার কেবা কারা চুরি করে নিয়ে যায়।

জাহাঙ্গীর আলম এ ঘটনায় হোসেনপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ইব্রাহিম মাস্টার প্রভাবখাটিয়ে তার ভাতিজা ফরিদ মিয়ার ছেলে জুনাককে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করে। তবে জুনাকের পরিবারের সদস্যদের দাবি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

সরে-জমিনে গিয়ে কথা হয় স্থানীয় দক্ষিণ চরপুমদী গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে হাজী নিজাম উদ্দিন (৭০), একই গ্রামের মৃত হাজী মো রহিমের পুত্র সফির উদ্দিন (৬৫), মৃত রইছ আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৫০), মৃত আঃ হাশেরের পুত্র আমির হোসেন (৭০), মৃত হাছেন আলীর ছেলে কাঞ্চন মিয়া (৫০), মৃত নেজাম উদ্দিনের ছেলে মিলন মিয়া (৬০), মৃত আঃ হেকিমের ছেলে হাজী আঃ কাদির, মৃত ইছমাইল হোসেনের ছেলে আলিম উদ্দিন ও চরপুমদী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মুবকুল মিয়াসহ আরো অনেকের সাথে।

তারা জানান, দক্ষিণ চরপুমদী নামার বন্দে ইব্রাহিম মাস্টারের একটি ডিপটিউবওয়েল রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে সে বোর মৌসুমে জমিতে সেচের পানি দিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করে আসছেন। কিন্ত প্রায় তিন বছর ধরে দক্ষিণ চরপুমদী নামার বন্দে একই গ্রামের হাজী নুরুল ইসলামের ছেলে সজল মিয়ার একটি ডিপটিউবওয়েল ফরিদ মিয়ার ছেলে জুনাক ও মৃত আলতাফ উদ্দিনের ছেলে বাচ্চু মিয়া দুইজনে মিলে বছরে বিশ হাজার টাকায় লীজ নিয়ে ঐ বন্দে বোর জমিতে সেচের পানি দিয়ে আসছে। এতে চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ইব্রাহিম মাস্টার।

তাদেরকে দেখে নেওয়ার বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়। ইতিমধ্যে অনেক হয়রানিও করেছে তাদেরকে। তারই ধারাবাহিকতায় পারিবারিক বিরোধের জের ধরে জুনাককে ইব্রাহিম মাস্টার মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা বলে সে সর্বত্রই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বেড়ায়। স্থানীয়রা আরো জানান, সে পারেনা এমন কোন কাজ নেই।

ক্ষমতাধর ইব্রাহিম মাস্টার এর আগেও একই কায়দায় দক্ষিণ চরপুমদী গ্রামের মৃত ইমাম হোসেন ওরফে সাইবে মিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিনকে চোর বানিয়ে মোটা অংকের জরিমানা আদায় করে নেয়। এরপর এমনি ভাবে ইব্রাহিম মাস্টার অপর একটি চুরির নাটক সাজিয়ে একই গ্রামের মৃত নবী হোসেন এর ছেলে রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।

এলাকায় ইব্রাহিম মাস্টার একজন মামলাবাজ বলেও পরিচিত। তার ছোট ভাই ফিরোজ মুন্সী একই গ্রামের আঃ করিম এর ছেলে শরীফ মিয়ার কাছে ৪ শতাংশ জমি সাফ কাওলা দলিল মূলে বিক্রয় করে। এ কারণে ইব্রাহিম মাস্টার প্রিয়নসই মামলা করে শরীফ মিয়ার সাফ কাওলা সম্পত্তি বেদখলের পায়তারা করছে।

ইব্রাহিম মাস্টারের ছেলে ইছব আলী খসরু পুলিশের সাবইন্সপেক্টর বলে তার ক্ষমতার দাপট দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী নিরীহ কৃষক জুনাকের একটাই চাওয় অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ প্রশাসন যেন তাকে দ্রæত তদন্ত সাপেক্ষে মিথ্যা চুরির মামলা থেকে যেন মুক্তি দেয়।

এদিকে জুনাকে মিয়ার বাবা ফরিদ উদ্দিন গতকাল শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর নিকট তার ছেলেকে মিথ্যা মামলার ফাঁসানোর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলার সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty