বাজিতপুর প্রতিনিধি, হোসেন মাহবুব কামাল :
বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুরের দক্ষিণ পিরিজপুর গ্রামে দীর্ঘদিন যাবত চলছিলো বাড়ি নিয়ে দ্ব›দ্ব। এই নিয়ে গত ১৫ বছর ধরে পাশ্বু মিয়া ও জসিমউদ্দীন একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে। কিন্তু দু’গ্রুপই আওয়ামী লীগের অনুসারী হওয়ায় গ্রামীণ সালিশ-দরবারীরাও নিচ্ছিল অনৈতিক সুবিধা।
দখল-পাল্টা দখলের খেলায় গত ১৫ বছর ধরে চলে এক নারকীয় তাণ্ডব। এক পর্যায়ে জসিম গ্রুপের কাছে হেরে যায় পাশ্বু। জসিমের দখলে থাকা বাড়ির কিছু অংশ ক্রয়কৃত জমি সাফ কাওলা মালিক হলেও যেতে পারেনি পাশ্বু মিয়া। এমনকি তার একটি মুরগীর ফার্মও বন্ধ থাকে। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পাল্টে যায় দৃশ্য। এলাকরা ও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন স্থান থেকে অর্থের বিনিময়ে পাশ্বু মিয়া দেন মরন কামর।
গত বুধবার (২জানুয়ারি) শতাধিক লোক নিয়ে হানা দেন জসিমের বাড়িতে। লড়ি-ট্রাকের মাধ্যমে জসিমউদ্দীনের ঘর, আসবাবপত্র, পানির টিউবওয়েল, কাপড়, শিশুদের বই খাতা, বিদ্যুতের মিটার, রান্না করার সকল উপাদান সহ ঘরের সবকিছু গুড়ি দেন।
দিনব্যাপি তাণ্ডব চালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয় জসিমের বাড়ির অস্তিত্ব। ঘরের টিন টুকরো টুকরো করে বিক্রি করে দেন ভাঙ্গারীর দোকানে। পরদিন (বৃহস্পতিবার) জসিমউদ্দীনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার সত্যতা খোঁজে পান এবং ভাঙ্গারির দোকানীকে যাতে আলামত নষ্ট না করে সে ব্যাপারে নিষেধ করে আসেন।
গত শুক্রবার দিন সন্ধ্যায় পাশ্বু মিয়া সংবাদ সম্মেলনে করেন, সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোছা. সাইমা আক্তার। বক্তব্য পেশ করেন পাশ্বু মিয়া ও তার স্ত্রী। দীর্ঘ বক্তব্যে তারা স্বীকার করেন যে তারাই ঘরটির এমন অবস্থা করেছেন, আবার কখনো অস্বীকারও করছেন। তার এক মেয়ের জামাই কাজী মহীউদ্দীন বলেছেন যে, ঘর-দোয়ার বাতাসে উধাও হয়ে গেছে (যার সব কটি ভিডিও রের্কড রয়েছে)। এলাকার তাজুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, রবিউল, আসাবউদ্দীন সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, যেহেতু থানা ও আদালতে মামলা রয়েছে, সেখানে এমন নারকীয় তাÐব কেনো? তারা এমন তাÐব জন্মের পর আর দেখেননি। তাদের মতে, পাশ্বু মিয়া যদি জসিমের নিকট থেকে ভ‚মি ক্রয় করেও থাকেন, কিংবা আদালতের রায় তার পক্ষে থাকে, তবুও এমন পৈশাচিক কাজ তারা করতে পারে না। এ ঘটনায় মো. জসিম মিয়া বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এই বিষয়ে বাজিতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোরাদ হোসেন বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি যেহেতু সেটা ভ‚মি সংক্রান্ত বিষয়, তাই প্রশিকিউশনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে।