প্রতিনিধি অষ্টগ্রাম : অষ্টগ্রাম সরকারী রোটারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোজতবা আরিফ খাঁনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অপসারণের দাবিতে উত্তাল হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম। তাদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভিন্ন সংগঠন, মাদ্রাসা ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
অষ্টগ্রাম সরকারী রোটারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ছাড়াও অষ্টগ্রাম হোসেনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নূরুল আবছার, অষ্টগ্রাম সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবেশ দাস, বাঙালপাড়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হরিচরণ দাস এবং অষ্টগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান খাঁন ও প্রধান শিক্ষিকা নাছিমা আক্তারে বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাঙালপাড়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হরিচরণ দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও অন্যরা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে অষ্টগ্রাম সরকারী রোটারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোজতবা আরিফ খাঁনের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন। অষ্টগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান খাঁন ও প্রধান শিক্ষিকা নাছিমা আক্তারের অপসারণের দাবিতে। এদিকে অষ্টগ্রাম সরকারী রোটারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোজতবা আরিফ খাঁনকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পাল্টা মিছিল করেছেন কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের একটি অংশ।
অষ্টগ্রাম সরকারী রোটারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুকুল। তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, আওয়ামী লীগের সময় অধ্যক্ষ মোজতবা আরিফ খাঁনের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল না। এই অধ্যক্ষ বর্তমানে একটি মামলার আসামী। তিনি নিয়োগ পাওয়ার পর নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে এমন কোন অনিয়ম নেই যার সাথে তিনি জড়িত নন। তার সময়ে তিনি বিএনপিপন্থী ৫ জন প্রভাষককে চাকুরী ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছেন।
অষ্টগ্রাম সরকারী রোটারী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোজতবা আরিফ খাঁন তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্বপূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি এর একটির সাথেও জড়িত নই।
অষ্টগ্রাম হোসেনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নূরুল আবছার তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, আমি ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে কোন কাজ করিনি। তবে অষ্টগ্রাম সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবেশ দাস বলেন, আমি যেহেতু মানুষ, আমি ভুল-ত্রæটির উর্ধ্বে নই। যদি আমার কোন ভুল থাকে তা আমি সংশোধনের চেষ্টা করবো।
অষ্টগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরা জানান, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান খাঁন ও প্রধান শিক্ষিকা নাছিমা আক্তার তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। এ দু’জন একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের জিম্মী করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। বিক্ষোভকারীরা তাদের অপসারণ দাবী করে অনতি বিলম্বে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাছিমা আক্তারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি ফোন ধরেননি। তার স্বামী ও বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান খাঁন ফোন ধরলেও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সাথে সাথেই ফোন কেটে দেন।