প্রতিনিধি, নিকলী (কিশোরগঞ্জ) আব্দুর রহমান রিপন : কিশোরগঞ্জের নিকলীতে বীর বিক্রম মতিয়র রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মরহুমের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের উপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাদ আসর নিকলী উপজেলা পরিষদ কাম-অডিটোরিয়ামে এই সভার আয়োজন করে বীর বিক্রম মতিয়র রহমান স্মৃতি সংসদ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মুর্শিদ আলী মাস্টার এর সভাপতিত্বে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ আবদুল মান্নান এর সঞ্চালনায় এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক আবীর, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মানিক মিয়া, নিকলী মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দীপক কুমার বিশ্বাস,
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ খাইরুল ইসলাম, উপজেলা জাসাস এর আহ্বায়ক শেখ রানা ও সদস্য সচিব তাজভীর হোসেন প্রান্ত, ছাত্রদল নেতা হিমেল আহমেদ, আবু জামান খোকন, নিকলী গোরাচাঁদ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কারার আব্দুর রশিদ, নিকলী কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্ববায়ক পিয়াস, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আষাঢ় প্রমুখ।
স্মৃতিচারণ করে বক্তারা বলেন, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মতিয়র রহমার বীর বিক্রম এর মৃত্যুর ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও তার স্মৃতি রক্ষার কোন উদ্দ্যেগ বাস্তবায়িত হয়নি। মতিউর রহমান ১৯৭১ সালে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজের এলাকায় গিয়ে ছাত্র-যুবকদের সংগঠিত করতে থাকেন। পরে তিনি ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁকে ৫ নম্বর সেক্টরের অধীনে বড়ছড়া সাব-সেক্টরে পাঠানো হয়।
পরে তিনি কোবরা কোম্পানির যোদ্ধাদের নিয়ে ৩ নম্বর সেক্টরের আওতাধীন কিশোরগঞ্জ এলাকায় আসেন। ২০ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী এবং ৯ নভেম্বর করিমগঞ্জের ইটনায় তিনি যুদ্ধ করেন। ২৭ নভেম্বর তাঁর কোবরা কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অষ্টগ্রাম মুক্ত করে কিশোরগঞ্জের ভাটি এলাকায় এক বিরাট মুক্তাঞ্চল গড়ে তোলেন। গচিহাটাতেও তাঁর কোবরা কোম্পানি কৃতিত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে। বীর বিক্রম মতিয়র রহমান ৬ অক্টোবর ২০১২ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
আলোচনা সভার শেষদিকে মতিয়র রহমার বীর বিক্রম এর আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজত পরিচালনা করেন পুকুরপাড় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব এ জে এম শাহাববুদ্দিন।