স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জ বাংলাদেশের একটি প্রথম শ্রেণির এবং পুরনো পৌরসভা। সেই তুলনায় পৌরসভার সেবার মান দিনদিন কমছে। বর্তমানে যদি আপনি কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ভিতরে হাঁটাচলা করেন তাহলে বুঝতে পারবেন পৌরসভার মান কেমন। ফুটপাতে হাঁটার জন্য এক ফুট জায়গাও নেই।
রাস্তায় অসহনীয় যানজট, রাস্তার দু’পাশে হকারদের সারিসারি দোকান। বৈধ-অবৈধ অটোতে ভরে গেছে আমাদের শহর। বিভিন্ন মোড়ে বা বাসার সামনে উপচে পড়ছে ডাস্টবিনের ময়লা। যা দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেও পড়ে থাকে। আমাদের বড় বাজার মোরগ মহলে মশার চাষ হচ্ছে। হয়তো শুনে অবাক হচ্ছেন। হ্যাঁ সেটাই বাস্তব। ড্রেনের উপচে পড়া নোংরা পানিতে সয়লাব মোরগ মহলের মাঠ। মাঝে মাঝে পরিছন্নতা কর্মীরা ড্রেনগুলো পরিষ্কার করলেও ড্রেনের ময়লাগুলো রাস্তার উপরেই রেখে দেয়।
বৃষ্টিতে সে ময়লা আবার গিয়ে ড্রেনে পড়ে। কারণ, ড্রেন থেকে তোলা ময়লাগুলো যথা সময়ে পরিছন্নতাকর্মীরা নেন না। দুই তিন দিন পর সেটা পরিষ্কার করেন।
পৌর শহরের মাঝ দিয়ে চলা নরসুন্দা ধীরে ধীরে প্রায় পুরোটাই বেদখল হয়ে গেছে। আমরা পৌরবাসী পলিথিনে ময়লা ভরে সেগুলো নদীতে ফেলে নদীর স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য নষ্ট করছি। অবৈধ দখলদারদের কথা নাইবা বললাম। আপনি যদি বড় বাজার ও পুরানথানা ব্রিজে যান সেখানে নদীই খুঁজে পাবে না।
আমাদের পৌরসভার প্রধান সমস্যা যানজট। বিশেষ করে বড় বাজার, জাহাঙ্গীর মোড়, গৌরাঙ্গ বাজার, আঠারো বাড়ি কাচারি মোড়, গৌরাঙ্গ বাজার ব্রিজ, পুরানথানা, একরামপুর এলাকায় দুপুরের পর থেকে যানজট চরম আকার ধারণ করে।
গত মাস ছয়েক পূর্বেই পৌর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ অভিযানে গৌরাঙ্গবাজার ব্রিজ, পুরান থানা ব্রিজ ও শহরের ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত হয়েছিল। সে অভিযানে শহরের যানজট কমে ছিল এবং হকার মুক্ত হয়েছিল ।
কিন্তু গত রোজার ঈদের পর থেকে পৌর প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে ধীরে ধীরে আবার দখল হচ্ছে ফুটপাত। যা দেখার মত কেউ আছে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে না।
শহরের গৌরাঙ্গ বাজার সজল ইলেকট্রিকের সামনে এবং রংমহল সিনেমা হলের সামনে ড্রেনের স্লাবগুলো ভেঙে গেছে। ৩২ জেলা সরণী মোড়, নরসুন্দা লিংক রোডের রাস্তার স্লাবগুলো বহুদিন যাবত ভেঙ্গে আছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লাল কাপড় টানিয়ে জনগণকে সতর্ক করছেন।
তারপরও মাঝে মাঝে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে সেটা দেখার কেউ নেই। আসলে আমরা পৌরবাসী অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি। সমস্যাগুলোর আসু সমাধানে নাগরিকদের চাওয়া পৌর মেয়র এ ব্যাপারে একটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবেন সাথে পুলিশ প্রশাসনও থাকবে। নগরবাসীর দাবি যানজট মুক্ত, ময়লা মুক্ত একটি পরিচ্ছন্ন শহর। যেখানে নাগরিকরা প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে পার, ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারবো।