প্রতিনিধি, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) জামাল আহমেদ : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিষাক্ত ও পচা চিনির সাথে ফিটকারী, হাইড্রোজ ও রং মিশিয়ে তৈরি করছেন ভেজাল গুড়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে কারখানা। খবর পেয়ে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে কারখানা মালিক সিন্ধু পোদ্দারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রেদওয়ান আহমেদ রাফি। এসময় তার সাথে ছিলেন পৌরসভার স্যানেটারি ইনেস্পেক্টর নাসিমা বেগম ও পুলিশ।
শহরের রানীর বাজার শাহী মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বিষাক্ত ও পচা চিনির সাথে ফিটকারী, হাইড্রোজ ও রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল গুড়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে মিশুক ট্রের্ডাস নামে ভেজাল গুড় কারখানা। সিন্ধুর মালিকানাধীন মিশুক ট্রের্ডাস কারখানার পরিচালনা দায়িত্বে রয়েছেন তার ছেলে শিমুল পোদ্দার।
কারখানা ঘুরে দেখা যায়, ভারত থেকে আনা পচা চিনি দিয়ে তৈরি করছে গুড়। সাথেই রয়েছে ফিটকারী, হাইড্রোজ ও রং। বিষয়টি দেখে কয়েকজন সাংবাদিক উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে তারা ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার সত্যতা পেয়ে কারখানার মালিককে আর্থিক জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় কারখানায় উৎপাদিত ভেজাল গুড়ের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে ঢাকার ল্যাবে পাঠানো হয় এবং একইসাথে কারখানাটি আপাতত বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।
স্থানীয়দের দাবি, ভৈরব শহরের একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ শাহী মসজিদ। পাশেই ভেজাল গুড় তৈরির কারখানা। এখানে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। নিয়মিত কারখানায় তৈরি হয় ভেজাল গুড়। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা বেগম জানান, কারখানার পাশেই আমি পরিবার নিয়ে থাকি। কারখানার কালো ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছি আমরা। পচা-বাসি গন্ধে বমি পর্যন্ত হয়। আবাসিক এলাকায় কারখানাটি দীর্ঘদিন যাবত ভেজাল গুড় উৎপাদন করে যাবার অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ভেজাল সব খাবারই মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। চিনি, ফিটকারী, হাইড্রোজ ও রং ব্যবহার করে তৈরি গুড় খেলে মানবদেহের অনেক ক্ষতি হবে।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রেদওয়ান আহমেদ রাফি জানান, খবর পেয়ে গতকাল বিকেলে আমি কারখানাটিতে অভিযান চালাই।
খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিনি দিয়ে গুড় উৎপাদন করার অভিযোগে কারখানা মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করি। একইসাথে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছি। গুড়ের নমুনা ঢাকায় ল্যাবে পাঠিয়েছি। ভেজাল প্রমান হলে তার কঠোর শাস্তিসহ কারখানাটি বন্ধ করে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।