নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক দন্ত চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মো. হাবিবুর রহমান নামে এক রোগীর মুখমÐলের উপরিভাগের ১৪টি দাঁত কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ভুয়া দন্ত চিকিৎসক শামীমা আক্তারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রক্ষিতে গত শনিবার রাতে পুলিশ দন্ত চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে। ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান (৬০) শহরের জগন্নাথপুরের কান্দার হাটি এলাকার বাসিন্দা। তিনি একজন ইতালি প্রবাসী।
জানা গেছে, দাঁতের চিকিৎসা লাভজনক দেখে বিডিএস ডিগ্রি ছাড়াই দন্ত চিকিৎসক বনে যান শামিমা আক্তার। গড়ে তোলেন নাফিসা ডেন্টাল কেয়ার নামে একটি দন্ত চিকিৎসালয়। ডাক্তার না হয়েও শহরের নিউটাউন এলাকায় চেম্বার দিয়ে বসেন শামিমা আক্তার। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের অসহায় ও সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।
ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি একজন ইতালি প্রবাসী। বিদেশ থেকে আসার পর আমার দাঁতে ব্যাথা দেখা দেয়। দেশের বাইরে থাকায় স্থানীয় দন্ত চিকিৎসালয় সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা নাই। আমার বাড়ি ও ডাক্তার শামীমা আক্তারের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় সে আমাকে দন্ত চিকিৎসক বলে নিজেকে পরিচয় দেয়।
পরে আমি চলতি বছরের গেল ২৬ আগস্ট তার মালিকানাধীন নাফিসা ডেন্টাল কেয়ার-এ গেলে সে নিজেকে ডেন্টাল সার্জন বলে আমার নিকট পরিচয় দেন। চিকিৎসার শুরুতে তিনি আমার ব্যাথাযুক্ত দাঁত পরীক্ষা করে সামনের ৩টি ছিদ্রওয়ালা দাঁতে ক্যাপ পড়িয়ে দেন। এর বিনিময়ে সে ৯০ হাজার টাকার বিল নেয়। কিছুদিন পর আমি ইতালি চলে যাই।
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ইতালি চলে গেলে ঐখানে হঠাৎ একদিন ক্যাপ খুলে যায়। পরবর্তীতে আমি দেখতে পাই, সে আমাকে অবস করে ৩টি দাঁতের পরিবর্তে আমার ভালো দাতঁসহ ১৪টি দাঁত ঘষে ক্যাপ লাগিয়ে দিয়েছে, যা আমি জানতাম না। ক্যাপ খুলে যাওয়ার পরবর্তীতে দাঁতে সমস্যা দেখা দিলে দেশে ফিরে আবারও তাঁর কাছে যাই। তখন আমার দাঁত মাড়ি সহ ফুলে মুখের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়।
তখন সে নানান ভাবে আমাকে এই বিষয়ে বুঝানোর চেষ্টা করে। সে আমাকে ভুল চিকিৎসা করেছে আমি বুঝতে পেরে অন্য ডাক্তারের কাছে যাই। সেখানকার দন্ত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান যে, প‚র্বের ভুল চিকিৎসায় দাঁতে খুব মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এতে আমার ১৪টি দাঁত হারাতে হয়েছে।
পরবর্তীতে আমি তার কাছে এই কর্মকাÐের বিষয় জানতে গেলে, সে আমাকে বিভিন্ন কথা বলে এবং হুমকি প্রদান করে। আমি আমার অঙ্গহানী ও সঠিক বিচারের আশায় থানায় মামলা দায়ের করেছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মো. শাহিন মিয়া বলেন, অভিযুক্ত দন্ত চিকিৎসক শামীমা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। গতকাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।